রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে ৮ /১০ কিলোমিটার উত্তরপুর্বের গ্রামের অধিকাংশ মানুষের কাজ ছিলো অন্যের জমিতে কাজ করা । কিন্তু এ চিত্র এখন বদলে গেছে।
এসব গ্রামে এখন ভোর হতে না হতেই শুরু হয় বাকবাকুম বাকবাকুম ডাকাডাকি। খাবার দিলেই ঘর ছেড়ে দল বেঁধে উড়ে আসে রঙ-বেরঙের বাহারি কবুতর। তখন তাদের মিষ্টি ডাকে বাড়ির উঠান গমগম করে। ঘরে চালা, আঙ্গিনা, টিনের ছাপড়া আর বাড়ির উঠান জুড়ে চলে কবুতরের ডাক।
গাইবান্ধার কয়েক ইউনিয়নের বাড়িতে এমন দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে ঘাগোয়া ও গিদারী ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রামের চিত্রই এমন। বিভিন্ন জাতের কবুতর খামার আকারে পালন করে এসব গ্রামের অবস্থা পাল্টে গেছে। সাবলম্বী হতে শুরু করেছেন অধিকাংশ গ্রামবাসীই। এতে তাদের সংসারে সুখ শান্তি আর সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের কবুতরের খামার গড়েছেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার উত্তর ঘাগোয়া, দক্ষিণ ঘাগোয়া, মালিবাড়ি, গিদারী, দাড়িয়াপুর, রুপার বাজারসহ অন্তত ৮টি গ্রামের বাসিন্দারা। আগে শখ করে বাড়িতে দু-চার জোড়া কবুতর পালন করা হতো। কিন্তু এখন লাভের আশায় এসব গ্রামের বাসিন্দারা খামার আকারে কবুতর পালনের দিকে ঝুঁকছেন।
গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ছোট বা বড় আকারের কবুতর খামার রয়েছে। আর এসব খামারে সাধারণ কবুতরের পাশাপাশি ঝর্ণা সেটিং, বুলু সেটিং, গিরিবাজ, হলুদ মুক্কি, লাল মুক্তি, লাল মুক্তি, লাক্কা, রাহুল, নান, লোটন নামের কবুতর পালন করা হচ্ছে।
খোলাহাটির রাজু আহম্মেদ, জয়; রুপার বাজারের আতোয়ার রহমান, সোহেল মিয়া; দাড়িয়াপুরের সালাম মিয়া, মজিবর রহমান ও মর্জিনাসহ শতাধিক নারী-পুরুষ কবুতর পালনকে এখন পেশা হিসেবে নিয়েছেন।
প্রথম প্রথম তারা শখের বশে কবুতর পালন করতেন। বর্তমানে এই কবুতর পালনই তাদেরকে সফলতা এনে দিয়েছে। তাদের এই সাফল্য দেখে এলাকার আরও অনেক বেকার যুবক কবুতরের খামার তৈরিতে আগ্রহী হয়েছেন।
আনালেরতাড়ি গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, আগে অন্যের জমিতে কাজ করেছি। কিন্তু পাশের গ্রামের একজনের বাড়িতে কবুতর পালন করা দেখে আগ্রহ জাগে আমার। তার বাড়িতে কবুতর পালন শিখি আমি।
এরপর হাট থেকে ২ জোড়া কবুতর কিনে খামার শুরু করি আমি। ১ হাজার টাকা দিয়ে ২ জোড়া কবুতর ৭ মাসে ২শ জোড়া হয়েছে। খাবারের জন্য যা খরচ হয় তা বাদ দিয়ে আমি অন্তত লাখ টাকার কবুতর বিক্রি করেছি। এই টাকা দিয়েই আমার সংসার চলে, বলেন তিনি।