শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৪:৩৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গরুর হাল। কৃষিজীবী মানুষ দ্রুত কাজ করতে ব্যবহার করছেন আধুনিক যন্ত্রপাতি। ফলে ব্যবহার কমেছে ঐতিহ্যবাহী অনেক কৃষি যন্ত্রপাতির।
উত্তরের জনপদ গাইবান্ধা। রাজা গোবিন্দের গোচারণ ভূমি এই গাইবান্ধায় এক সময় গরুর হাল ছিল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। কাকডাকা ভোরে চাষিরা এই গরুর হাল দিয়ে জমি চাষ করতে বের হয়ে যেতেন। পরে চাষিদের স্ত্রীরা আসতেন পান্তাভাত নিয়ে। জমির আইলে বসে শুকনো মরিচ আর পান্তাভাত খেয়ে রংপুরের ভাওয়াইয়া গান গেয়ে আবার জমি চাষ শুরু করতেন চাষিরা। সময়ের বিবর্তনে পাল্টে গেছে সেই দৃশ্যপট।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়া খালি ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মালিক বলেন, আমরা আগে যখন গরুর হাল দিয়ে জমি চাষ করতাম তখন গ্রামের মানুষরা আধুনিক যন্ত্রপাতির কথা কল্পনাও করতে পারেনি। তারা তখনো ভাবতে পারেনি সময়ের সঙ্গে এই যন্ত্রগুলোও আধুনিক হবে। এখন আর গরুর হাল চোখে পড়ে না। আমিরা ইঞ্জিনচালিত মেশিন দিয়েই জমি চাষ করি।
পলাশবাড়ী উপজেলার তালুক জামিরা গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, এক সময় আমরা গান গেয়ে সারাদিন জমি চাষ করতাম। এখন গরুর হাল বাদ দিয়ে ইঞ্জিনচালিত মেশিন দিয়ে জমি চাষ করি। ফলে এক দিনে অনেক জমি চাষ করা যায়।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কৃষক কলিম উদ্দিন বলেন, দিন যাচ্ছে আর হামাগেরে কপাল খুলে যাচ্ছে। আগে হামরা সারাদিনে এক বিঘা জমি (৩৩ শতক) চাষ করতাম গরুর হাল দিয়ে। আর এখন মেশিন আসার পরে একদিনে প্রায় ২০-৩০ বিঘা জমি চাষ করা যায়। আরো কতো কী দেখবো বাহে কে জানে।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-পরিচারক মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময় গাইবান্ধার ৭ উপজেলার কৃষকদের জন্য সরকারিভাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ২৫ শতাংশ ভর্তুকিতে পওয়ারটিলার ও ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে ধান কাটার মেশিন বিতরণ করা হয়। গরুর হাল দিয়ে এক বিঘা জমি চাষ করতে সময় লাগতো ৮ ঘণ্টা, এখন শ্যালো মেশিনচালিত পাওয়ারটিলার দিয়ে এক বিঘা জমি চাষ করতে সময় লাগে ১ ঘণ্টা। তাতে কৃষকরা দ্রুত সময়ে জমি চাষ করে ফসল ফলাতে পারছেন। খরচও কম হচ্ছে।