বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ১২:০৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ খোলা আকাশ আর খোলা জায়গায় চেয়ারে বসে মাথার চুল কাটছেন এক ব্যক্তি। চুল ও দাড়ি কাটানোর জন্য আরও কয়েকজন রয়েছেন অপেক্ষায়। পাশেই দাঁড়িয়ে চুল কাটা দেখছেন অনেকেই। সময় আর কম টাকায় চুল আর দাড়ি কাটতে পারায় প্রসন্ত চন্দ্রের কদর রয়েছে এলাকায় বিলুপ্তির পথে টুল-পিঁড়িতে বসে চুল-কাটা হারিয়ে যেতে বসেছে ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দরদের চুল ও দাড়ি কাটার দৃশ্য।
বর্তমানে শহর- রন্দর ও গ্রামের হাট বাজার গুলোতে রয়েছে এসি ও নন- এসি সেলুন। আছে পুরুষদের জন্য পারলারও। সেসব সেলুন ও পারলারে চুল ও দাড়ি কাটার জন্য রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মেশিন। তবে কালক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছে ভ্রাম্যমাণ সাদুল্লাপুর উপজেলার ইদিলপুর গ্রামে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। দুই দশক আগেও বিভিন্ন হাটবাজার ও প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে প্রসান্তের মতো ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দরদের চোখে পড়ত। মূলত হাটবাজারে ইটের ওপর অথবা পিঁড়িতে বসিয়ে কিংবা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁরা মানুষের চুলদাড়ি কেটে পরিপাটি করে দিতেন। বর্তমানে এমন নরসুন্দরদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। হঠাৎ প্রত্যন্ত এলাকার কোনো হাটে তাঁদের দু-একজনের দেখা মেলে। তাঁদের নির্দিষ্ট কোনো বসার জায়গা নেই। যেখানে সুযোগ পান সেখানেই চুল- দাড়ি কাটার সরঞ্জাম আর বসার চেয়ার,ইট, পিঁড়ি নিয়ে তাঁরা বসে পড়েন। ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে হাটবাজারে, পথের ধারে ও বাড়িতে গিয়ে চুল-দাড়ি কাটেন প্রসান্ত চন্দ্র। উপজেলার ইদিলপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি। বাবার হাত ধরে এই পেশায় আসেন তিনি।
ফুটপাতের নাপিত হলেও তাঁর কাজ খুব ভালো। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে এসে তাঁর কাছে চুল কাটাতাম। এখনও করি। চুল-দাড়ি কাটতে ওর কোন রেট নেই।৩০-৪০ টাকা হলে কাটা যায়্।দোকানে গিয়ে সিরিয়াল দিতে হয় এর পর আবার টাকাও দিতে হয় এর চেয়ে অনেক বেশী। তাই এখানে কাটা হয়।
একসময় তাঁর মতো যাঁরা ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দর হিসেবে বিভিন্ন হাটবাজারে কাজ করতেন তাঁদের প্রায় সবাই পেশা পরিবর্তন করেছেন, নয়তো আধুনিক সেলুনে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু বাপদাদার পথ অনুসরণ করে তিনি এখনো ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দর হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে চুল-দাড়ি কাটার সরঞ্জাম নিয়ে ঘুরে বেড়ান। অল্প খরচে যাঁরা চুল-দাড়ি কাটতে চান, মূলত তাঁরাই তাঁর গ্রাহক।
সব মিলিয়ে ৪ থেকে ৫ শ টাকা আয় হয় তাঁর। এই টাকাতে চালাতে হয় সংসার।