শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম

হুমকিতে বাঁধ ও বিদ্যুতের খুঁটিঃ সাদুল্লাপুরে অবৈধ ট্রাক্টর-মহেন্দ্র দিয়ে মাটি বিক্রির মহোৎসব

হুমকিতে বাঁধ ও বিদ্যুতের খুঁটিঃ সাদুল্লাপুরে অবৈধ ট্রাক্টর-মহেন্দ্র দিয়ে মাটি বিক্রির মহোৎসব

নলডাঙ্গা (সাদুল্লাপুর) প্রতিনিধিঃ সাদুল্লাপুরের হামিন্দপুর, জামুডাঙ্গা ও মোল্লাপাড়াসহ ৮টি এলাকায় অবাধে ফসলি জমিসহ খাস জমির মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাতের আঁধারে স্থানীয় মাটি-বালু ব্যবসায়ীর একটি সংঘবদ্ধ চক্র কৃষকদের নামমাত্র মূল্য দেয়াসহ অনেকের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে রমরমা বাণিজ্য চালাচ্ছেন। এছাড়া চক্রটির বিরুদ্ধে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেঙে যাওয়া স্থানের মাটি এবং নীলকান্তের ছড়ার (সরকারী খাস) জমির মাটিও গভীর করে কেটে নেওয়ার অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। এমনকি পল্লী বিদ্যুতের স্থাপিত খুঁটি জমি থেকেও ৫-৬ ফুট গর্ত করে চক্রটি মাটি লুট করায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। এভাবে মাটি কেটে পাচার করায় ওই এলাকার অনেক কৃষি জমি খাল ও পুকুরে পরিণত হওয়াসহ আশপাশের জমি পড়েছে ভাঙনের মুখে। উত্তোলিত মাটি অর্ধশতাধিক ট্রাক্টর-মহেন্দ্র দিয়ে পাচার করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। ট্রাক্টর-মহেন্দ্রর বিরামহীন চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সাদুল্লাপুর-নলডাঙ্গা পাকা সড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়ক। পাশপাশি বিকট আওয়াজ আর ধুলাবালির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আশপাশের জনজীবন। শুধু জামুডাঙ্গা ও মোল্লাপাড়া নয়, সংঘবদ্ধ চক্রটি হামিন্দপুর, ম-লপাড়ার চর, বাঁধের মাথা, ব্রীজের পশ্চিম পাশ ও পাটনিপাড়ায় স্পট করে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই মাটি বিক্রির মহাষজ্ঞে মেতেছেন বালুখেকো ফুল মিয়া তার ছেলে জুয়েল ও স্থানীয় শফি, চিনু, কামরুল এবং বাবলুসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তারা প্রতিরাতে লাখ লাখ টাকার মাটি কেটে ৩০ থেকে ৪০টি ট্রাক্টর ও মহেন্দ্র দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছে। প্রকাশ্যে মাটি কেটে বিক্রির হিড়িক চললেও রহস্যজনক কারণে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও প্রশাসনের নীরবতায় ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। গত শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘাঘট নদীর তীর ঘেঁষে মালিকানা ফসলি জমি ছাড়াও নদীর তলদেশ এবং সরকারী খাস নীলকান্তের ছড়ার (ইজারাভুক্ত) জমি থেকেও গভীর গর্ত করে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া মোল্লাপাড়ার হামিদ, কুদ্দুস ও সিদ্দিকের ২ বিঘা উচু জমিতে এক্সকাভেটর (ভেকু) মেশিন বসিয়ে মাটি কেটে পাচারে ওই জমি পুকুরে পরিণত হয়েছে। চিহ্নিত বালু খেকো জুয়েল মিয়াসহ ৪-৫ জন ব্যবসায়ী রাতের আঁধারে ড্রাম ট্রাকে করে ওই জমির মাটি গাইবান্ধায় বিক্রির অভিযোগ করেন আশপাশের বাসিন্দারা। বাঁধের মাথা এলাকার খলিল মিয়া, চাঁন মিয়া ও আল-আমিনসহ স্থানীয়রা জানান, চিহ্নিত বালু খেকো ও ভূমিদস্যু অবাধে কৃষি জমি ছাড়াও নদীর চর ও সরকারী খাস নীলকান্তের ছড়ার মাটি কেটে বিক্রি করছেন। তারা রাতের আঁধারে ২০০-৩০০ ট্রাক্টর-মহেন্দ্র দিয়ে উপজেলা ছাড়াও জেলা শহরে লাখ-লাখ টাকার মাটি বিক্রি করছে। এতে এলাকার অনেক জমি বড় গর্তসহ পুকুরে পরিণত হয়েছে। এছাড়া মাটি বহণে বেপরোয়া গতিতে বাঁধের ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে এসব যন্ত্রদানব ট্রাক্টর ও মহেন্দ্র। ভোররাত পর্যন্ত বিকট শব্দে এসব ট্রাক্টর চলাচলে নির্ঘুম রাত কাটছে মানুষের। এ পরিস্থিতিতে স্থানীয়দের আশঙ্কা, অবৈধভাবে মাটি বহনকারী এসব ট্র্যাক্টর নির্বিঘেœ চলাচল করায় যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে জীবন হানিকর দুর্ঘটনা।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com