শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নাগরিকদের জরুরি চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে বিনামূল্যে দুটি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করেছেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি। অ্যাম্বুলেন্স দুটিতে সেবা নিতে পারছেন প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র মানুষরা। গত চার বছর ধরে চলা এই সেবা কার্যক্রমে অ্যাম্বুলেন্স দুটি কমপক্ষে ৫০ হাজার রোগীকে বিভিন্ন হাসপাতাল ও কিনিকে পৌঁছে দিয়েছে। বিনা ভাড়ার এই অ্যাম্বুলেন্স সেবা গাইবান্ধা জেলায় স্বাস্থ্যসেবায় এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
জানা গেছে, ব্যক্তিগত অর্থায়নে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী দুটি ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করেন। ২০১৮ সালের ২০ মার্চ থেকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অ্যাম্বুলেন্স দুটির সেবা শুরু হয়। অ্যাম্বুলেন্স দুটি পরিচালনা করছে ডঃ এমআই পাটোয়ারী ফাউন্ডেশন। অ্যাম্বুলেন্স সেবার প্রয়োজনে ০১৭১০-৫২৭৬৬৫ হটলাইন নম্বরে যেকেউ ফোন দিলেই দ্রুত সময়ে পৌঁছে যায় অ্যাম্বুলেন্স। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত এই সেবা পাচ্ছেন সুন্দরগঞ্জবাসী।
অ্যাম্বুলেন্স দুটির সমন্বয়কারী নুর মোহাম্মদ রাফি বলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটিমাত্র অ্যাম্বুলেন্স থাকায় জরুরি রোগী বহনে পরিবহন সংকটে ভোগান্তি বাড়ে। এমপি ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুটি অ্যাম্বুলেন্স চালুর পর উপজেলাবাসীর সেই ভোগান্তি অনেকটা লাঘব হয়েছে। উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিদিন দুই থেকে চার জন রোগীকে বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে পৌঁছে দেওয়া হয় অ্যাম্বুলেন্স দুটিতে। গত চার বছরে উপজেলার কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ এই অ্যাম্বুলেন্স সেবা গ্রহণ করেছেন। অক্সিজেনসহ আধুনিক সেবার অ্যাম্বুলেন্স দুটির খরচ এমপি নিজেই বহন করছেন।
অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া বেলকা গ্রামের আফসার আলী বলেন, স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে হট লাইনে ফোন করলে বাড়িতে আসে ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে দ্রুত পৌঁছাই রংপুরের একটি কিনিকে। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনে স্ত্রী জন্ম দেয় ফুটফুটে সন্তান।
ছাপরহাটি গ্রামের আশরাফুল আলম বলেন, কয়েকদিন আগে হঠাৎ মা স্টোক করেন। পরে এমপির অ্যাম্বুলেসে মাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ায় তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা সম্ভব হয়েছে। এই অ্যাম্বুলেন্স সেবা মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করছে।
অ্যাম্বুলেন্সের চালক খোরশেদ আলম ও মোশারফ হোসেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তারা বলেন, আমরা সব সময় মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত আছি। দিনে-রাতের যেকোনও সময় ফোন পেলেই রোগীদের কাছে ছুটে যাই আমরা। প্রতিদিন গড়ে দুই-তিন জন, কখনও তারও বেশি জরুরি রোগীকে যেখানে নেওয়া প্রয়োজন সেখানেই পৌঁছে দিচ্ছি। অ্যাম্বুলেন্সে বহন করা এসব রোগীর বেশির ভাগই গ্রামাঞ্চলের প্রসূতি নারী ও অসহায় বৃদ্ধ রোগী।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচনি অঙ্গীকার হিসেবে মানুষের জরুরি মুহূর্তে সুচিকিৎসা নিশ্চিতে ব্যক্তিগত অর্থে দুটি অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করেছি। ইতোমধ্যে বিনা ভাড়ায় অ্যাম্বুলেন্স দুটি ব্যবহার করে দরিদ্র-অসহায় রোগীরা হাসপাতালে পৌঁছে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। করোনার সংকটকালীন সময়েও অ্যাম্বুলেন্স সেবার কোনও ব্যত্যয় ঘটেনি। সুন্দরগঞ্জবাসীর জন্য সার্বক্ষণিক এই সেবা চালু থাকবে।