সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন

সাদুল্লাপুরে হোগলা পাতা পণ্যে স্বপ্ন বুনছে তারা

সাদুল্লাপুরে হোগলা পাতা পণ্যে স্বপ্ন বুনছে তারা

সাদুল্লাপুর প্রতিনিধি ঃ একদম টগবগে যুবক সবুজ মিয়া। বয়স ৩৫ বছর ছুঁইছুঁই। করবেন নিজের ভাগ্য বদল। পাশাপাশি গ্রামীন মানুষের কর্মসংস্থান। এই স্বপ্নে শুরু করা হয়েছে হোগলা পাতা পণ্য তৈরী কারখানা। এ কারখানায় যুক্ত হয়েছেন শতাধিক নারী-পুরুষ। তাদের হাতের কারচুপিতে বানানো হচ্ছে হরেক রকম পণ্য। এসব পণ্যেই দিনবদলের স্বপ্ন বুনছেন তারা।
সম্প্রতি সরেজমিনে সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের পাকুরিয়ার মাঠ নামকস্থানে এস.এইচ.পি হ্যা-িক্রাফ্টস কারখানায় দেখা যায়, হোগলা পাতা দিয়ে নানা পণ্য তৈরীর চিত্র। এখানকার কারিগররা হাতের কারুকার্যে তৈরী করছে বাসকেট, হ্যাংগিং, ঝুড়ি, টপ, টেবিল ম্যাট, ফ্লোর ম্যাট, নার্সারী পট, মাদুল, সোফাসেট, ফুলদানিসহ প্রায় ২০০ প্রকারের পণ্যসামগ্রী। তারা আপন খেয়ালে এসব পণ্যসামগ্রী ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জানা যায়, ওই ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ মিয়া জীবিকার তাগিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন রাজধানী ঢাকায়। সেখানে ওইসব পণ্য ফ্যাক্টরীতে প্রথমে শ্রমিক হিসেবে যোগ দেন। এরপর কর্মদক্ষতায় সুপারভাইজার থেকে ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এভাবে দীর্ঘ ১০ বছর কাজ করার পর নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান দ্বার করবেন, এমন পরিকল্পনা মাথায় নেয়। এ ব্যবসা অনেকটাই লাভজনক। তাই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি এলাকার দরিদ্র মানুষগুলোকেও স্বাবলম্বি করার স্বপ্ন দেখেন। এই স্বপ্নকে বাস্তবরূপ দিতে গত তিন মাস আগে সাদুল্লাপুর-ঠুটিয়াপকুর পাকা সড়কের পাকুরিয়ার মাঠ নামকস্থানে হোগলা পাতা পণ্য তৈরীর ফ্যাক্টরী স্থাপন করা হয়। এ কারখানার নাম দেওয়া হয় এস.এইচ.পি হ্যা-িক্রাফ্টস। পণ্য তৈরীর জন্য নোয়াখালী, বরিশাল ও ভোলা জেলার কৃষকদের কাছ থেকে হোগলা পাতা ও রশি সংগ্রহ করা হয়।
সবুজ মিয়ার পরিচালনায় ইতোমধ্যে ইনচার্জ, সুপারভাইজার ও শ্রমিকসহ শতাধিক লোক কাজ করেছে। শ্রমিকদের মধ্যে অধিকাংশরাই নারী। দরিদ্র পরিবারের এসব নারী নিজ বাড়িতে বসে বানাচ্ছেন পণ্যসামগ্রী। তারা সংসারের কাজের পাশাপাশি এই কাজটি করে প্রত্যেক মাসে বেতন পাচ্ছেন ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা। আর বেশীরভাগ পুরুষ শ্রমিক কাজ করছে ওই কারখানায়। তারা প্রত্যেক মাসে বেতন তুলছেন ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা। এখন এ কাজটি করে স্বাবলম্বি হচ্ছে তারা। তাদের এই স্বচ্ছলতা দেখে এলাকার আরও অনেক নারী-পুরুষ কারখানায় যুক্ত হতে শুরু করেছে। তৈরীকৃত পণ্যগুলো পাইকারীতে বিক্রি করা হচ্ছে ঢাকায়। ক্রেতারা বানিজ্যিক ভিত্তিতে পণ্যসামগ্রী বিদেশে পাঠাচ্ছে বলে জানা গেছে।
সাদুল্লাপুর উপজেলার নারী-পুরুষ শ্রমিকরা এই কুটির শিল্পের নীরব বিপ্লব ঘটাচ্ছেন। সংসারের অভাব দূর করতে তারা এখন আত্ননির্ভশীল তারা। হোগলা পাতায় যেন তাদের এখন নিত্যসঙ্গী।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com