রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন

সাঘাটায় অবৈধ চুল্লিতে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা

সাঘাটায় অবৈধ চুল্লিতে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা

স্টাফ রিপোর্টারঃ ইট ও মাটির প্রলেপ দিয়ে তৈরি অর্ধগোলাকার ১৬টি চুল্লি। সেখান থেকে বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া। চারদিকে অসহনীয় দুর্গন্ধ। পাশেই পোড়ানোর অপেক্ষায় স্তূপ করে রাখা কাঠ। সম্প্রতি সাঘাটা উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি গ্রামের রায়হান মিয়ার কয়লা তৈরির কারাখানায় গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
কথা হলে রায়হান মিয়া বলেন, সবাইকে ম্যানেজ না করে কারখানা চালাতে পারব। শুধু আপনারা সংবাদ প্রকাশ করলেই তখন অভিযান হয়।
শুধু বাঙ্গাবাড়ি নয়, এ উপজেলায় আরও আটটি কয়লা তৈরির কারখানা আছে। এ ছাড়া গোবিন্দগঞ্জেও ৬টি কারখানা আছে। এসব কারখানায় শতাধিক চুল্লিতে প্রতিদিন হাজার হাজার মণ কাঠের জোগান দিতে উজাড় হচ্ছে গাছপালা।
সাঘাটা উপজেলার ধনারুহা, নাশিরারপাড়া, ছিলমানের পাড়া, মথরপাড়া, ঘুড়িদহ, পাঁচ গরগড়িয়া, বড়াইকান্দি, বাঙ্গাবাড়িতে পুড়ছে কাঠ। বাঙ্গাবাড়ি গ্রামের রায়হান মিয়াসহ নয় ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন কয়লা তৈরির অবৈধ কারখানা। এ ছাড়া গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নে জীবনপুর এলাকায় ৬টি স্থানে বেলাল হোসেন ও বকুল মিয়ার নেতৃত্বে গড়ে তোলা হয়েছে কয়লা তৈরির কারখানায়। প্রতিটি চুল্লিতে ১৫০ মণ কাঠ ঢুকিয়ে তাতে দেওয়া হচ্ছে আগুন। এমন একেকটি কারখানায় কমপক্ষে ১০টির অধিক চুল্লি রয়েছে। স্বল্প উচ্চতার এসব চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়া ও তাপে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, নষ্ট হচ্ছে ফসল ও গাছপালা।
সাঘাটার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ধোঁয়ার কারণে এখানকার লোকজন শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অভিযোগ করলে মাঝেমধ্যে লোক দেখানো অভিযান চালায় প্রশাসন। কিন্তু স্থায়ী কোনো প্রতিকার মেলে না। কারখানার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করারও সাহস পায় না।
কথা হলে মহিমাগঞ্জের কারখানার মালিক বকুল মিয়া বলেন, প্রতিবেদন করলেও আপনারা কারখানা বন্ধ করতে পারবেন না। অতএব ঝামেলা না করে চলে যান।
পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন বলেন, কিছুদিন আগেও সেখানে অভিযান করা হয়েছে। এর পরও কারখানা বন্ধ হয়ে না থাকলে আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা সাঘাটা উপজেলা সভাপতি মাসুদুর রাহমান মাসুদ বলেন, অবৈধ কারখানা বন্ধে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু স্থায়ী বন্ধ হয় না। কালো ধোঁয়ায় সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগের পাশাপাশি ফসলহানিও ঘটছে। এসব দেখেও যেন প্রশাসন নীরব।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com