শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম

ডাকবাংলা-জুমারবাড়ি সড়ক উন্নয়ন কাজের ধীরগতি জনদুর্ভোগ চরমে

ডাকবাংলা-জুমারবাড়ি সড়ক উন্নয়ন কাজের ধীরগতি জনদুর্ভোগ চরমে

সাঘাটা প্রতিনিধিঃ সাঘাটা উপজেলার ডাকবাংলা চৌ-মাথা হতে জুমারবাড়ী বাজার প্রবেশ পথ পর্যন্ত (ডাকবাংলা হাট-জুমারবাড়ী ইউপি সড়ক) সড়ক উন্নয়ন কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের ইটের খোঁয়া, পলিমাটি ব্যবহার, রাস্তার বারাম কেটে টপ নির্মাণ এবং কাজে স্থবিরতাসহ, বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে । খোড়া-খুড়ি রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় জনসাধারণ চলাচলে বিঘœসহ দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
জানা যায়, ডাকবাংলা- জুমারবাড়ী সড়কটি অত্যন্ত জনগুরত্বপূর্ণ একটি সড়ক। রাতদিন ২৪ ঘন্টায় এ সড়কে যানবাহ চলাচল করে। কিন্তু সড়কটির প্রশস্ততা কম এবং ভাঙ্গাচুড়া হওয়ায় এলাকাবসি দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির প্রশস্ততা বৃদ্ধিসহ উন্নয়নের দাবি করে আসছিল। এর প্রেক্ষিতে সাঘাটা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশ অধিদপ্তর (এলজিইডি), পল্লী সংযোগ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ডাকবাংলা -চৌ-মাথা হতে জুমারবাড়ী বাজার প্রবেশ পথ পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়কের প্রশস্তকরণ এবং কার্পেটিংয়ের লক্ষে প্রক্কলিত মূল্য ৫ কোটি ৪৩ লাখ ৮৬ হাজার ৪৫৩ টাকা ব্যায়ে বিগত ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের ৫ তারিখে কাজের চুক্তি সম্পাদন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ঢাকার মাক ইঞ্জিনিয়ারিং রাস্তার কজের দায়িত্ব পেলেও কাজটি জাহিদ নামে বগুড়ার জনৈক ঠিকাদার সাবকন্ট্রাক নিয়ে বিগত ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ডেপুটি স্পীকার আলহাজ অ্যাডঃ ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি’র মাধ্যমে কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ২০ নভেম্বর ঠিকাদার রাস্তার উন্নয়ন কাজ আরম্ভ করেন এবং চলতি বছরের ৩১ শে মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ।
সে লক্ষে ঠিকাদার কাজ আরম্ভ করলেও মাঝে মধ্যে কচ্চপ গতিতে কাজ করে আবার বন্ধ রাখেন। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার কখনো কাজ শুরু করেন কখনো বন্ধ করেন এই অবস্থায় প্রায় দেড় বছরে সড়কের কাজ হয়েছে মাত্র ২০ ভাগ। বাকী ৮০ ভাগ কাজ রেখেই চলতি বছর ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে সড়কের কাজ আবার বন্ধ করেন ঠিকাদার। জনসাধারণের প্রশ্ন প্রায় দেড় বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ২০ ভাগ তাহলে ৮০ ভাগ কাজ শেষ করতে আরো কতবছর লাগবে ? এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যসহকারী হারুন অর-রশিদ এর সাথে কথা হলে তিনি কচ্চপ গতিতে কাজের বিষয়ে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, সড়কে এপর্যন্ত ২০ ভাগ কাজ হয়েছে। আগামী সপ্তাহে বাকী কাজ শুরু হবে। কাজ বন্ধের ব্যাপারে সাব-কন্ট্রাক নেয়া ঠিকাদার জাহিদের সাথে কথা হলে তিনি জানান, যে কাজ হয়েছে তার বিল এখনো পাওয়া যায়নি, কাজের শ্রমিকদের মজুরী বাকী আছে একারণে কাজ বন্ধ আছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদা বাঁধের কারণে অন্যাণ্য সড়কের চেয়ে এ সড়কের উচ্চতা অনেক বেশী সে কারণে স্লোপের মাটি ধরে রাখার জন্য সড়কের উভয় পাশের স্লোপে গাইডওয়াল নির্মাণ করে স্লোপে মাটি ভরাট করার কথা। কিন্তু সড়কের পশ্চিম পাশের সড়কের স্লোপে মাটি না কেটেই কাজ বন্ধ করেন। এছাড়া সড়কজুড়ে দু’পাশে গাইডওয়াল নির্মাণ করার কথা থাকলেও সড়কের কোনো কোনো অংশে তা করা হয়নি। সড়কের পূর্ব পাশের বর্ধিত অংশের সাব-বেসে নিম্নমানের বালুর সঙ্গে মাটির ব্যবহার, দুই স্তরে পানি ব্যবহার না করে রোলার করে কমপ্যাক্ট করা হয়েছে। সড়কের পশ্চিম পাশের স্লোপে এখনো কাটা হয়নি মাটি, করা হয়নি সাব-বেস, হয়নি টপ নির্মাণ যেমন ভাঙ্গা-চুড়া সড়ক তেমনি আছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা নিম্নমানের চিত্র সড়কজুড়েই। পবনতাইড় এলাকার বাসিন্দা জোবায়দুর রহমান, বাদশা মিয়া ও আব্দুল ওয়াহেদ অভিযোগ করেন, ‘রাস্তার সাব-বেসে সঠিকভাবে পানি দিয়ে কমপ্যাক্ট করা হয়নি। ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমেই এই রাস্তা টিকবে না। তারা জানান, ঠিকাদারের লোকজনকে নিয়ম মেনে কাজ করার অনুরোধ করা হলেও তারা তা শোনেননি। এমন অবস্থায় চলতে থাকলে স্থানীয় লোকজন রাস্তার বারাম কাটার বিষয়ে বাঁধা-নিষেধ করিলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাস্তার কাজ বন্ধ করেন। স্থানীয় কয়েকজন শ্রমিক জানান, এলাকার প্রায় ১০০ শ্রমিক এই রাস্তায় কাজ করত। এলাকার লোকজন কাজের অনিয়মের কথা বলায় ঠিকাদার শ্রমিকদের মজুরী না দিয়েই এক মাস আগে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ব্যস্ততম এ সড়কের উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকার কারণে জনসাধারণের চলাচলে একদিকে বিঘœ ঘটছে পাশাপাশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চরম ভাবে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com