শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধা শহরের পরিত্যক্ত ঘাঘট নদ ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি। পোকামাকড় ও কচুরিপানায় ভরে গেছে পুরো ঘাঘাট নদ। সেকারণে ভয়ে কেউ ঘাঘট নদে নামতে চায় না। সেই আবর্জনা ভর্তি লেক এলাকায় দৃষ্টিনন্দন দুটি সেতুসহ বিনোদন পার্ক গড়ে উঠলেও মশা-মাছিও দুর্গন্ধে মানুষ জন দাঁড়াতে পারে না।
২০২২ সালের শেষের দিকে পৌরসভার উদ্যোগে ঘাঘট নদ থেকে কচুরিপানাসহ আবর্জনা অপসারণ করা হলেও আজও পরিস্কার-পরিছন্নতার অভাবে র্দুগদ্ধ, মশা-মাছিসহ বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ড্রেনের ময়লা ও মল ঘাঘট নদে এসে পড়ছে। তাতে ময়লা-আবর্জনা পচে পানি হয়ে পড়েছে দূষিত। এতে পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। পচা দুর্গন্ধ, ময়লা-আবর্জানাযুক্ত পানিতে গোসল, কাপড় ধোয়ায় অপরিষ্কার পানি থেকে রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ঘাঘট নদের আশপাশের বাড়িঘরে দিনের বেলায় মশার হাত থেকে বাঁচতে মশারি ও কয়েল ব্যবহার করতে হয়। ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে থাকা যাচ্ছে না।
এদিকে তিন কিলোমিটার এ ঘাঘট লেকের চলাচলের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে পাকা রাস্তা, সিঁড়ি, অত্যাধুনিক দৃষ্টিনন্দন দুটি সেতু, বসার জন্য পাঁকা ২০টি ব্রেঞ্চ পার্কটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিলেও ঘুরতে আশা নানা শ্রেণিপেশার মানুষ ময়লা-আবর্জনা, মশা-মাছি ও দুর্গন্ধে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না।
ঘাঘট নদের আশপাশের বাড়ীঘরে থাকা যাচ্ছে না। লেক হয়ে কোন উপকারে লাগেনি। নিয়মিত পরিস্কার করার কথা থাকলে পৌরসভা থেকে তা করা হচ্ছে না।
শিক্ষার্থী আতোয়ার হোসেন রানা বলেন, ঘর থেকে বেরোলেই যানজট। যানবাহনের কালো ধোঁয়ার সঙ্গে ধুলাবালু তো আছেই। তাই মুক্ত বাতাস গ্রহণ করতে এখানে এসেছি। দৃষ্টিনন্দন সেতু, পাকা সিঁড়ি ও বসার বেঞ্চ দেখে ভালো লাগছে।
কলেজছাত্রী উম্মে হাবিবা বলেন, পাকা দালানে ঘেরা শহরের পরিবেশ। বিশুদ্ধ বাতাস নেওয়ার সুযোগ নেই। তাই লেকে আসা। অনেকের সঙ্গে দেখা হলো। ভালো লাগল। শহরের ব্রিজ রোড এলাকার বাসিন্দা খাদেমুল ইসলাম বলেন, লেকটি পরিষ্কার করে নৌকা, ভাসমান খাবার হোটেল ও দুই পাশে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করলে এটি জেলার অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে। এ জন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে।
গাইবান্ধা যুব নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক জিয়াউল হক বলেন, গাইবান্ধা শহর হলেও বিনোদনের জায়গা ছিল না। ঘাঘট লেক প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ায় বিনোদনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন। মানুষ এখানে এসে সময় কাটাচ্ছেন। এতে তরুণ-যুবকদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা কমে যাবে। তারা এখন সেতুতে এসে সেলফি তুলছে। মুক্ত হাওয়ায় আড্ডা দিচ্ছে। এখানে নানা বয়সের মানুষের সমাগম ঘটছে।
এ প্রসঙ্গে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মতলুবর রহমান বলেন, লেকটি পরিষ্কার করা হবে। অল্প দিনের মধ্যেই লেকে নৌকা ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এসব কাজ বাস্তবায়নে টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তখন ঘাঘট লেকটি পূর্ণাঙ্গ বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে।