শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০২ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধা জেলার ব্র্যান্ডিং শস্যের মধ্যে ভুট্টা অন্যতম একটি রবিশস্য। চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া থাকায় বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলসহ মেইনল্যান্ডেও ভুট্টার ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। গাছে গাছে ধুলছে ভুট্টার পাকা মোছা, আবার আগাম জাতের ভুট্টা উঠতেও শুরু করেছে। কিন্তু ভুট্টা সংক্ষণের কোন সুযোগ-সুবিধা না থাকায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। এছাড়াও, যোগাযোগ সমস্যা এবং আশানুরুপ বাজার মূল্য না থাকায় লোকসানের হিসাব গুণছেন চাষিরা।
চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। গতবছর বন্যা না হওয়ায় চরাঞ্চলের চাষিরা কিছুটা আগেই ভুট্টা চাষ করায় মাড়াইও শুরু হয়েছে। উৎপাদন ভাল হলেও বর্তমান বাজারমূল্য কম থাকায় লোকসানের হিসাব করছেন। ফুলছড়ির দেলুয়াবাড়ি চরের চাষি হাফিজার রহমান জানান, চার একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। ভুট্টা পাকতে শুরু করেছে। তবে বাড়িতেও ভুট্টা রাখার স্থান নেই। সরকারিভাবে রাখার ভুট্টা সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নানা থাকায় বন্যাকালীন চরম বিপাকে পড়েন বলেও জানান তিনি।
সাঘাটার ভুট্টা চাষি আকতারুজ্জামান জানান, চরের চাষীদের বড় সমস্যা ভুট্টা সংরক্ষণ নিয়ে। এই সময়ে মাড়াই করে বাড়িতে রাখছেন, তবে বিক্রি করতে না পারায় সংরক্ষণ নিয়ে সমস্যা পড়তে হয়।
আবার এই সুযোগে পাইকার ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কম মূল্যে ভুট্টা ক্রয়ের সুযোগ নিয়ে থাকেন বলে জানান গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স সদস্য ব্যবসায়ী নওশের আলম। তিনি বলেন, মাড়াই মৌসুমে জেলায় ভুট্টার মূল্য অনেক কম থাকে।
এ বিষেয়ে জেলা কৃষি বিপনন অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, চাষিরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি ঠিক নয়। তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সংরক্ষণ সুযোগ না থাকায় চাষিরা অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতির ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। তবে, চরাঞ্চলে গবেষণামূলক বিভিন্ন ধরনের শস্যের চাষাবাদ বাড়ার পাশাপাশি উৎপাদনও বেড়েছে বলে জানান সরেজমিন উদ্যানতাত্ত্বিক কৃষি গবেষণা বিভাগের ডঃ আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, কৃষকদের উৎপাদন জ্ঞান ও দক্ষতা বেড়েছে। এখন প্রয়োজন সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা। চলতি মৌসুমে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি এবং ভাল ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, জেলায় প্রতিবছর ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন।