শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ করোনার সামাজিক সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়েই বন্ধ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ রয়েছে বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত কিন্ডারগোর্টেন স্কুলগুলোও। এতে গাইবান্ধার বিভিন্ন স্থানে পাড়া-মহল্লায় গড়ে ওঠা কিন্ডারগার্টেন, প্রি-প্রাইমারি, প্রি-ক্যাডেট ও প্রিপারেটরি স্কুলগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের বড় দুর্দিন চলছে। প্রায় দেড় মাসের বেশী সময় ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় অর্থকষ্টে পড়েছেন তারা। এপ্রিল পার হলেও স্বল্প বাজেট ও বিনিয়োগে গড়ে ওঠা এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা এখনও মার্চ মাসের বেতন পাননি। ঈদের আগে স্কুল না খুললে এপ্রিল মাসের বেতন এবং উৎসব বোনাসও পাবেন না বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
গাইবান্ধার সাত উপজেলায় কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে চারশ’র বেশী। এসব স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। করোনা সংক্রমণ এড়াতে সরকারী নির্দেশনায় গত ১৭ই মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে জেলার সব কিন্ডারগার্টেন স্কুল। মাসের মাঝামাঝি বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতনটাও নেওয়া যায়নি। করোনায় আটকে গেছে তাদের বেতন। এছাড়া বেশিরভাগ স্কুলের ঘরভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলও দেওয়া হয়নি। জমানো টাকাও শেষ। ত্রাণ নিয়ে পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে না কেউ। লজ্জায় কারও কাছে বলতেও পারছেন না। ফলে স্কুলগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা করোনাকালে কষ্টে আছেন।
সরকারি বা বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুলের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে সরকারি বেতন-ভাতা থাকলেও ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা এসব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তা না থাকায় করোনাকালে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। মূলত শিক্ষার্থিদের বেতনেই বেতন পান এসব স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা। করোনার কারণে দেশের অর্থনীতির এমন বিপর্যয়ের পর শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা স্কুল বন্ধ থাকাকালীন মাসের বেতন পরিশোধ করবেন কিনা তা-নিয়েও তারা সন্দিহান। ফলে চরম সংকটে রয়েছেন এসব স্কুল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্টরা। সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারী সহযোগীতার দাবি জানিয়েছেন তারা।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার দারিয়াপুরে জয়নাল আবেদীন প্রিপারেটরি স্কুলের অধ্যক্ষ সুমন কুমার বর্মন বলেন, তিনি গত মার্চের বেতন এখনও পাননি। কবে পাবেন, তাও অনিশ্চিত। সব মিলে দিশেহারা অবস্থা। তিনি জানান, তার বিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষক-কর্মচারীর দশাও একই। করোনার কারণে আকস্মিকভাবে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ও পরীক্ষার ফি তারা আদায় করতে পারেননি। একই চিত্র এখন জেলার সব কিন্ডারগার্টেন স্কুলের।
ওই এলাকার আইডিয়াল প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুর রউফ বলেন, ‘এলাকার শিশুদের ভালোমানের শিক্ষা দিতে তিনি বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ। শিক্ষার্থীদের বেতন আদায় না হওয়ায় স্কুলের ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা। এরসাথে শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার ব্যাপারে একটা চাপ রয়েই যাচ্ছে। শিক্ষকদের বেতন না দিতে পারলে শিক্ষকরাও ভোগান্তিতে পড়বে।’
গাইবান্ধা কিন্ডারগার্টেন এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু রায়হান চাকলাদার বলেন, ‘করোনার জন্য আমাদের শিক্ষক-কর্মচারীরা বিপাকে পড়েছেন। অনেকের একমাত্র উপার্জনের রাস্তা হলো শিক্ষকতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকবান্ধব। তাই করোনাকালে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে আর্থিক সহায়তা চাইছি।