সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধার গায়েন সেরা কন্ঠের অন্বেষণ গ্রান্ড ফাইনাল গত শনিবার ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হয়। উক্ত গায়েন অনুষ্ঠানে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ-এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশের মিরাক্কেল খ্যাত জনপ্রিয় কমেডিয়ান আবু হেনা রনির সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ শহিদুল ইসলাম এনডিসি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাবিক) এ. কে.এম হেয়ায়েতুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন। গাইবান্ধার সাত উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, সহকারী কমিশনার গন, সংস্কৃতি মনা ব্যক্তিবর্গ, সুধিজন, অসংখ্য দর্শক শ্রোতা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। মাটির গন্ধে সুরের ছন্দে গাইবান্ধার গায়েন সেরা কন্ঠের অন্বেষণ গ্রান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠানে গাইবান্ধার গায়েন-এর সাথে সংশ্লিষ্ট উপস্থাপক, বিচারক, আমন্ত্রিত অতিথিসহ গ্র্যান্ড ফাইনাল রাউন্ডে গাইবান্ধার স্বনামধন্য দুইজন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পীকে গাইবান্ধার গায়েন অনুষ্ঠানে উত্তরীয় পড়িয়ে দেওয়া হয়। গ্রান্ড ফাইনাল রাউন্ডে বিচারকের আসনে উপস্থিত ছিলেন রাজধানী থেকে ঢাকা থেকে আসা স্বনামধন্য বিচারক কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক মিল্টন খন্দকার, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী আলম আরা মিনুসহ উত্তরবঙ্গের সেরা কণ্ঠশিল্পী মুইন খান। উল্লেখ্য ৫৬২ জন কণ্ঠশিল্পী গাইবান্ধার গায়েনে রেজিস্ট্রেশন করে তাদেরকে নিয়ে ৪ জুলাই ২০২৫ ইং তারিখ যাত্রা শুরু হয় মাটির গন্ধে সুরের ছন্দে গাইবান্ধার গায়েন অনুষ্ঠান জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে। ৩২ জন গুণী বিচারকের প্রত্যক্ষ বিচারের ফলে প্রত্যেকটা শিল্পীর কন্ঠে গান শুনে প্রত্যেকের গানের মেধা যাচাই করে ৫৬২ জনের মধ্যে লড়াইয়ে টিকে থাকে ৫৬ জন। ৫৬ জনকে আবারো প্লাটফর্মে জায়গা করে দিয়ে বিচারকদের বিশ্লেষণ করে কাগজপত্র বয়সের জটিলতায় টিকে থাকে ৪৮ জন। ৪৮ জনকে দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় রাউন্ড কঠিন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সেখানে টিকে থাকে ২৮ জন। প্রথম রাউন্ডে টিকে থাকা ৪৮ জনকে জেলা শিল্পকলার একাডেমির শিল্পী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হয়। ৪৮ জন শিল্পীকে বাহিরের জেলার যারা কন্ঠের যাদুকর বিচারক সেই বিচারকদের নিয়ে এসে বিচার করার ফলে টিকে থাকে ২৮ জন। ২৮ জন কন্ঠ শিল্পী তো শিল্পকলার শিল্পী হয়েই গেছেন। তাদেরকে রেডিও সারাবেলা ৯৮.৮ এ গান গাওয়ার সুযোগে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। সুযোগের হাতছানি দিয়ে ডেকে আনা ২৮ জনকে গান গাওয়ার জন্য রেডিও সারাবেলার অন্তর্ভুক্ত করে নেয় । প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপ শেষে বিচারকরা প্রত্যেকটা শিল্পী কন্ঠে গান শুনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেমে নিয়ে আসেন ২০ জনে। ২০ জন শিল্পীকে নিয়ে তৈরি হয় কৌতূহল। ঢাকা থেকে আসা বাংলাদেশের স্বনামধন্য গীতিকার সুরকার আলাউদ্দিন আলীর সহধর্মিনী মিমি আলাউদ্দিন, ঢাকা থেকে আসার একজন বিচারক খালেদ মুন্না, বিটিভির সংগীত পরিচালক শামীম রেজার উপস্থিতিতে শুরু হয় কোয়ার্টার ফাইনাল। ২০ জন শিল্পীর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে ২০ জনকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে গান গাওয়ার সুযোগ এর প্রতিশ্রুতি দেন সংগীত পরিচালক বিটিভির শামীম রেজা। কোয়াটার ফাইনালের এই বিশ জনের মধ্যে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ১০ জনকে সেমিফাইনালের জন্য টিকিয়ে রাখা হয়। গত ২ আগস্ট বিকেল পাঁচটা বিচারকদের সামনে একটা রবীন্দ্রসংগীত অথবা নজরুল সংগীত গাইতে হয় শিল্পীদের সেইসঙ্গে গাইতে হয় বাংলা সিনেমার একটি করে গান। চূড়ান্ত ফলাফলে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয় ৫ জনকে। ফাইনালের স্বপ্ন টিকে রাখে পাঁচ জন মেধাবী কন্ঠ শিল্পী। এই পাঁচজন মেধাবী কণ্ঠশিল্পীকে নিয়ে শুরু হয় ফাইনাল রাউন্ড। প্রত্যেক কণ্ঠশিল্পী তাদের নিজের পছন্দমত একটি গান ও বিচারকের পছন্দ মত একটি গান গেয়ে মঞ্চ এবং দর্শকদের মনে জায়গা করে নেয়। সুরের মূর্ছনায় চলতে থাকে অনুষ্ঠান এদিকে চলতে থাকে বিচার কার্য। রাত যখন বারোটা পেরিয়ে গিয়েছে তবুও দর্শকের উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মত কে হবেন গাইবান্ধার সেরা গায়েন? তাকে দেখার জন্য দর্শক এবং সরাসরি বাড়িতে বসে থেকে লাইভে যুক্ত থেকে অনুষ্ঠান দেখতে থাকা দর্শকের যেন ঘুম আসছিল না। বিচারকার্য শেষে শুরু হয় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। গাইবান্ধার সেরা গায়েন নির্বাচিত হয়ে চ্যাম্পিয়ন হন গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের স্বজন খন্দকার। স্বজন খন্দকারকে এক লক্ষ টাকার চেক, গাইবান্ধার গায়েন-এর চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও উত্তরীয় পরিয়ে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শহিদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে রানার্স আপ হন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রতিযোগী আবদুল্লাহ আল মূতী (লিতু), তৃতীয় স্থান অধিকার করেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার আশিকুর রহমান, চতুর্থ স্থান অধিকার করেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রিংকি চাকি, পঞ্চম স্থান অধিকার করেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মুনিরা ইসলাম সুমি। দ্বিতীয় প্রতিযোগী রানার্সআপ লিতুকে ৭০ হাজার টাকার চেক, তৃতীয় প্রতিযোগী আশিকুর রহমানকে ৫০ হাজার টাকার চেক, চতুর্থ প্রতিযোগী রিংকিকে ৩০ হাজার টাকার চেক, পঞ্চম প্রতিযোগী সুমিকে ২০ হাজার টাকার চেক ও গাইবান্ধার গায়েন অনুষ্ঠানের ট্রফিসহ উত্তরীয় পড়িয়ে দেন প্রধান অতিথি বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শহিদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ।