সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ১২:২৩ অপরাহ্ন

গাইবান্ধার হাটগুলোতে ক্রেতা কম: গরু বেশি

গাইবান্ধার হাটগুলোতে ক্রেতা কম: গরু বেশি

স্টাফ রিপোর্টার: ঈদ-উল আজহার সময় ঘনিয়ে আসলেও গাইবান্ধার হাটগুলোতে পর্যাপ্ত পশু থাকলেও ক্রেতার কম থাকায় এখনো হাটগুলো জমে ওঠেনি। অন্যান্য ঈদ-উল আজহায় ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতা ও ব্যাপারীরা এলেও এবার সেটি দেখা যাচ্ছে না। এতে গরু বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন খামার মালিকরা।
জানা গেছে, বাজারে দেশি গরুর সরবরাহ থাকলেও আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। অন্যদিকে মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি, বড় গরুর চাহিদা কম। অন্যান্য বছর জেলায় গরু কিনতে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতা ও ব্যাপারীরা এলেও এবার তা চোখে পড়ছে না। স্থানীয় বেপারীদেরও এবার ঢাকায় গরু সরবরাহ করতে আগ্রহ কম। একদিকে গোখাদ্যর দাম বেশি, অন্যদিকে বাজারে গরুর চাহিদা কম। সব মিলিয়ে জেলার খামারিরা বিপাকে রয়েছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধায় কোরবানির জন্য প্রায় দেড় লাখ গরু প্রস্তুত রয়েছে। জেলায় খামারের সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার ৩৬৮টি। খামার ও কৃষকের কাছে কোরবানির জন্য ১লাখ ৯৬ হাজার ২৭৭ গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৫৮টি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট থাকবে ৬৯ হাজার ৯৭২টি পশু। পশু কেনা-বেচার জন্য জেলার সাত উপজেলায় কোরবানির স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে হাট বসছে ৪১টি।
জেলার সদর উপজেলার দারিয়াপুর, সাঘাটা উপজেলার হাট ভরতখালী, গোবিন্দগঞ্জ পৌর হাট ও পলাশবাড়ী উপজেলার মাঠের হাটসহ বেশ কয়েকটি কোরবানির পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন রং ও আকারের গরু উঠছে হাটে। আকার ভেদে ৫০ হাজার থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকা হচ্ছে। হাটে গরু দিয়ে ভরপুর কিন্তু ক্রেতা কম। এতে বিক্রেতারা হতাশায় রয়েছেন। অন্যদিকে হাট ইজরাদারদের খাজনা বেশি নেওয়ার অভিযোগ করছে অনেক ক্রেতা-বিক্রেতারা।
সদর উপজেলার দারিয়াপুর হাটে গরু নিয়ে আসা দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক মনিরুজ্জামান জানায়, এ বছর কোরবানির জন্য তিনটি গরু লালনপালন করেছে। গত শনিবার ও বৃহস্পতিবার গরু নিয়ে দুটি হাটে যান তিনি। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী মূল্য না পাওয়ায় গরু বিক্রি না করে বাড়িতে ফেরত নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, প্রতিটি গরুর দাম ওঠে ৭৫ হাজার টাকা। এই দামে বিক্রি করলে তার কোনো লাভ থাকবে না। গো-খাদ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে গরু পালতেও খরচ অনেক বেশি হয়েছে।
এ বছর সীমান্তে কড়াকড়ি থাকায় ভারতীয় গরু আসেনি। ফলে হাটগুলোতে দেশি গরুর প্রচুর সরবরাহ দেখা যাচ্ছে। তার পরও খামারিরা আশানুরূপ দাম না পাওয়ার অভিযোগ করছেন।
জেলার সাঘাটার উপজেলার ভরতখালীর পশুরহাটের ইজারাদার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এ হাটে সব চেয়ে বেশি চরাঞ্চলের গরু বেচাকেনা হয়। ক্রেতার সংখ্যার তুলনায় চার-পাঁচ গুণ বেশি গরুর সরবরাহ আছে। অন্যান্য বছর ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা গরু কেনার জন্য আসতেন। এবার বাইরের পাইকাররাও তেমন আসছেন না। ফলে কৃষকসহ খামারিরা অনেকটা বাধ্য হয়েই কম দামে গরু বিক্রি করছেন। তবে অনেকেই কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বিক্রিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
এব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিক্রেতাদের সহায়তা করতে অনলাইনে পশু বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে আগ্রহী বিক্রেতারা যোগাযোগ করছেন।

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com