বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ বেড়েই চলেছে বোরো বীজ ধানের দাম। গত মৌসুমের তুলনায় এবার কেজিতে দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। বিএডিসির সরবরাহ কম থাকায় ৫৬ টাকা কেজির বীজ ধান বেসরকারি কোম্পানির কাছ থেকে কিনতে হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। সাদুল্লাপুর উপজেলার হাট-বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুর রব সরকার জানান, বীজ বপন শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত। উৎপাদন কিংবা সংরক্ষণে প্রশিক্ষণ না থাকায় পছন্দের বীজ ধান সংগ্রহের জন্য কৃষকরা বাজারমুখী। এ সংকট নিরসনে বীজ সংক্ষণ প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।
সাদুল্লাপুর বাজারের লতা বীজ ভান্ডারের মালিক নরেশ চন্দ্র সাহা জানান, গত মৌসুমে বেসরকারি কোম্পানির প্রতি কেজি হাইব্রিড জাতের বোরো বীজ ধান বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজিতে। এবার বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। বাড়তি দামের কারণে কৃষকরা বীজ ধান কিনতে এসে তর্কে জড়াচ্ছেন। কোম্পানি যেভাবে দাম ধরেছে, সেভাবেই বিক্রি হচ্ছে।
বীজ ধানের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে বোরোর আবাদ কমে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন বড় জামালপুর গ্রামের কৃষক রিজু মিয়া। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, উচ্চ দামে বীজ ধান কিনে ফসল ফলালে নিশ্চিতভাবেই উৎপাদন খরচ বাড়বে। সঙ্গে হালচাষ, সার-কীটনাশক, সেচ বিল ও দিনমজুর বাবদ বাড়তি টাকা গুনতে হবে। এদিকে কর্তনের সময় ধানের দাম কমে গেলে ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব খেয়াল করে না।
কৃষি বিভাগ জানায়, উপজেলায় ১৫ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে বোরো রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য প্রস্তুত প্রায় ৬৩ হাজার কৃষক। বীজতলা হবে ১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে। এর জন্য প্রয়োজন ৪৮০ টন বীজ ধান।
বিএডিসি ডিলার সমিতির সভাপতি আক্কাস আলী বলেন, উপজেলায় ডিলার প্রতি মাত্র ৮০ থেকে ১০০ বস্তা বীজ ধান সরবরাহ হয়েছে। কৃষক পর্যায়ে ১০ কেজির এক বস্তা বীজ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫৬০ টাকায়। তাতে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৫৬ টাকা। তবে সরবারাহ অপ্রতুল।
চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে সাদুল্লাপুরের কৃষকের জন্য প্রণোদনার ১০ টন হাইব্রিড জাতের বীজ ধান বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলে জানান অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বসুনিয়া। এই বীজ ধান ৪ হাজার ২০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। ২৫ জন ডিলারের মাধ্যমে বিএডিসির ৫০ টন বীজ ধান বিক্রি হচ্ছে। কৃষক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রদর্শনী প্রকল্প থেকে সংরক্ষণে থাকা বীজ ধান পাওয়া যাবে প্রায় ৮০ টন।