মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ন
গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধিঃ স্কুলমাঠের অর্ধেকের বেশি অংশজুড়ে রাখা হয়েছে ইটের কংকর, পাথর ও পিলার। এক কোণে রয়েছে বুলডোজার। ছোট ছোট খোয়া ছড়িয়ে পড়েছে পুরো মাঠে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা। বাতাস হলেই উড়ছে ধুলো। এভাবে নির্মাণসামগ্রী রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। এরই মধ্যে প্রকল্পটির মেয়াদ ফের বাড়ানো হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাইয়াগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও চাঁদপুর আরেফিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ এভাবে দখল করে চলছে সেতুর নির্মাণকাজ। জানা গেছে, এক বছর ধরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি স্কুল মাঠে নির্মাণসামগ্রী ফেলে রেখেছে। এতে অনেকে আঘাতও পেয়েছে।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম বলছিল, তারা এক বছর ধরে মাঠে খেলাধুলা করতে পারে না। হাঁটাচলা করতেও নানান প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হয়। অনেক সময় ছোটরা হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছে।
রংপুর বিভাগ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানীয় একটি সেতু নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এটি বাস্তবায়ন করছে। গত বছরের ২৮ মে উপজেলার কাইয়াগঞ্জে করতোয়া নদীর ওপর এ নির্মাণকাজ শুরু হয়। কাজটি পায় জামালপুরের সরদারপাড়ার মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন যুবকের ভাষ্য, স্কুলের পাশেই আশরাফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বাড়ি। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। চাঁদা নিয়ে তিনি ঠিকাদারকে এ কাজে সহযোগিতা করছেন। ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়নি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আশরাফুল ইসলাম বলেন, স্কুলটি তাঁর বাড়ির পাশে হওয়ায় অনেকে এসে হয়তো সেখানে তাঁকে দেখতে পান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা নেই।
চাঁদপুর আরেফিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আকমল হোসেন ও কাইয়াগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রুবেল বলেন, স্কুলমাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা শোনেননি।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবুর রহমানের ভাষ্য, বিষয়টি জানার পর ঠিকাদারকে সাতদিনের মধ্যে নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা মোকাব্বর হোসেন বলেন, শিগগিরই স্কুল মাঠ থেকে নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নেওয়া হবে।
ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, নির্মাণসামগ্রী রেখে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা করা ঠিক হয়নি। অতিসত্বর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।