মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাঁচাবাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম লাগামহীন ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতাগণ নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। গত এক মাসের ব্যবধানে প্রতিটি পণ্যের দাম কেজি প্রতি ১০ হতে ৩০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকে বাজারদর জানার পর খালিহাতে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। পাশাপাশি ভোগ্যপণ্যসহ মাংস ও মাছের দামও বেড়ে গেছে ব্যাপক হারে। সাধারন ক্রেতাগণ বাজার মনিটরিং করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলার সুন্দরগঞ্জ, মীরগঞ্জ বাজারসহ পনেরটি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হঠাৎ করে প্রতিটি পণ্যের লাগামহীন ভাবে বেড়ে যায়। যার কারনে মধ্যবিত্ত, নিন্ম আয়ের ও অসহায় পরিবারদের পক্ষে কাঁচাবাজার পণ্য ক্রয় করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অনেক পরিবার লবন ভাত খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বর্তমান বাজারে প্রতিকেজি আলু ৫৫-৭০টাকা, বেগুন ৮০-১০০ টাকা, পটল ৮০-১০০ টাকা, করলা ১২০-১৫০ টাকা, সজিনা ৩০০-৩৫০ টাকা, শশা ১২০-১৬০ টাকা, মুলা ৬০-৭০ টাকা, কুমড়া ৭০-৮০ টাকা, ঢেড়স ৫০-৬০ টাকা, কচু ৮০-১০০ টাকা, প্রতিটি লাউ ৬৫-৭০ টাকা, পয়াজ ১২০-১৩০ টাকা, রসুন ২০০-৩২০ টাকা, মরিচ ৩৮০-৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৬৬০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১০০০ টাকায়। এছাড়া মাছের বাজারের কেজি প্রতি ৫০-১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আজ ১০দিন হতে মরিচের অভাবে লবন ভাত খেয়ে দিনাতিপাত করছি বলেন ভিক্ষুক রমিজান বেওয়া। তিনি আরও বলেন পাশের দুই বাড়িতে গিয়েছিলেন একটি মরিচের জন্য। তারা বলেন একটি মরিচের দাম ৩-৪ টাকা। মরিচ ধার দেয়া যাবে না।
ব্যাটারী চালিত অটোবাইক চালক স্বাধীন সরকার জানান, সারাদিন আটো চালিয়ে ৪৫০-৫০০ টাকা রোজগার হয়। তা দিয়ে চাল, তেল, ডাল, লবন কিনতে শেষ। কাঁচাবাজারে যাওয়ার কোন টাকা থাকে না। ১০০ গ্রাম মরিচের দাম ৪০ টাকা। কি করে সম্ভব, তরিতরকারি কেনা। কোনমতে পান্তা ভাত খেয়ে পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। আবেগের তাড়নায় বলেন, সৃষ্টিকর্তা জানেন এর সমাধান কবে হবে।
প্রতিবছর বন্যা হয়, বৃষ্টি বাদল হয় এর আগে তো কখনো এত দাম দেখি নাই। অনেকের দাবি বৃষ্টি বাদলের কারনে সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে উৎপাদন ব্যহত হয়েছে। সে কারনে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে সঠিক নয় বলেন মীরগঞ্জ বাজারের জুয়েল রানা। তিনি বলেন মহাজনদের সিন্ডিকেটের কারনে প্রতিটি পণ্যের দাম লাগাহীন ভাবে বেড়ে গেছে। কাঁচাবাজারের প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি শ্রমের দাম। বাজার মনিটরিং করে পণ্যের দাম স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা প্রয়োজন।
সুন্দরগঞ্জ বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম জানান, বেশিভাগ পণ্য জেলার বাইরের আরদ থেকে আনতে হয়। যানবাহনের খরচ দ্বিগুন হারে বেড়ে গেছে। সে কারনে পণ্যের দামও বেড়ে গেছে। স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত পণ্য অনেক কম। কাঁচামালে খুববেশি লাভ করার সুযোগ নেই। কারন কাঁচাপণ্য মজুদ রাখার যায় না। যানবাহন খচর এবং মজুরির দাম হিসাব করে মাল বিক্রি করা হয়।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. নাজির হোসেন জানান, প্রতিটি পণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য বাজার মনিটরিং জোরদার করা হবে।