বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

সড়কের উপরে গাড়ি পার্কিং দুর্ভোগে পথচারি বাস স্টান্ড বিহীন উপজেলা সুন্দরগঞ্জ

সড়কের উপরে গাড়ি পার্কিং দুর্ভোগে পথচারি বাস স্টান্ড বিহীন উপজেলা সুন্দরগঞ্জ

সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় স্থায়ীভাবে কোন প্রকার বাস স্টান্ড স্থাপন করা হয়নি। ১৯৭৩ সাল থেকে বিভিন্ন সরকারি পরিত্যাক্ত জায়গায়, প্রতিষ্ঠানের খোলা জায়গা, মালিকদের নিজস্ব জায়গায়, পেট্রোল পাম্প এবং সড়কে গাড়ী পার্কিং করে যাত্রীসেবা প্রদান করে আসছে। দিন দিন গাড়ীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রধান প্রধান সড়ক দখল করে গাড়ি পার্কিং করায় দুর্ভোগে পড়ছে পথচারি ও অন্যান্য যানবাহন সমুহ। এছাড়া সড়কে দাড়িয়ে ট্র্যাক, ট্র্যাংকল, লড়িতে মালামাল লোড আনলোড করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পৌরসভা ২০১৩ সালে পূর্ব বাইপাস মোড়ে বাস স্টান্ডের জন্য ৯০ শতক জমি ক্রয় ও অধিগ্রহণ করলে আজও মাটি ভরাট সম্পন্ন হয়নি। সত্তরের দশক থেকে বর্তমান পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে উপজেলার আব্দুল মজিদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়ক, মীরগঞ্জ সড়ক, দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাঠ, কাঁঠলতলী মোড়, সুন্দরগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় গেট সংলগ্ন সড়ক, পূর্ব বাইপাস মোড়, খলিল পেট্রোল পাম্প এবং পশ্চিম বাইপাস মোড় আব্দুল করিম পেট্রোল পাম্প থেকে রংপুর, গাইান্ধা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সাধারণ যাত্রীবাহি বাস, নাইট কোর্চ, মিনি কোর্চ যাত্রীসেবা প্রদান করে আসছে। সড়কে দাড়িয়ে যাত্রী উঠানাম করায় পথচারিসহ ছোটখাট যানবাহনকে চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে। গত বছর সুন্দরগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় গেট সংলগ্ন সড়কে গাড়ী পার্কিং করার সময় এক নারী পথচারি নাইট কোর্চের ধাক্কায় মারা যায়। অভিযোগ রয়েছে শ্রমিকরা সড়কে গাড়ী দাড় করিয়ে পরিস্কার করার কারনে ময়লা ও নোংরা পানি পথচারিদের শরীরে পরে জামা কাপড় নষ্ট হচ্ছে। ঢাকাগামি যাত্রী ছামিউল ইসলাম জানান বাস স্টান্ড না থাকায় সবসময় আমাদেরকে নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হচ্ছে। টিকেট কেটে মালামাল নিয়ে খোলা জায়গায় বসে থাকতে হয় অনেক সময়। এছাড়া যাত্রী ছাউনী এবং গনশৌচাগার না থাকায় পরিজন নিয়ে চরম দর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম আহবায়ক সাজেদুল ইসলাম জানান উপজেলার সবচেয়ে বড় সমস্যা এবং জনদুর্ভোগ হচ্ছে সড়ককি গাড়ী পার্কিং করে যাত্রীসেবা প্রদান। সমস্যা দেখার কেউ নেই, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও সকলে বিষয়টি জানেন কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। জনস্বার্থে অতি জরুরী বাস স্টান্ডটি চালু করা একান্ত প্রযোজন। ২০১৯ সালে এক নারী পথচারি গাড়ী চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা গেছে।
শ্রমিক সংগঠনের নেতা স্বপন কান্ত রায় জানান ১৯৭৩ সাল থেকে এই অবস্থায় চলছে বাস চলাচল। তিনি বলেন পৌর মেয়রের সাথে বহুবার বাস র্টমিনাল নিয়ে আলোচনা করেছি আজও সমাধান হয়নি। টিকিট কাউন্টার সেখানে থাকতে পারে কিন্তু গাড়ী থাকবে র্টমিনালে। যাত্রীরা টিকিট কেটে র্টমিনালে গিয়ে বাসে উঠবে, এটাই নিয়ম। কিন্তু র্টমিনাল না থাকায় সড়কে গাড়ী পার্কিং করে যাত্রী উঠানামা করা হচ্ছে। র্টমিনাল না থাকলেও পৌরসভা টোল নিচ্ছে।
বাস মালিক খয়বর হোসেন মওলা জানান বাস র্টমিনাল নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে জেলা প্রশাসক, দুনীতি দমন কমিশন, ডিডিএলজির নিকট আবেদন ও অভিযোগ করে কোন লাভ হয়নি। কোন কারনে হয়নি তা তিনি জানেন না। তিনি বলেন নিজের দায়িত্ববোধ থেকে মেয়রকে বাস র্টমিনালটি চালু করা প্রযোজন।
পৌর মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন মাটি ভরাটের কাজ চলছে। অল্প সময়ের মধ্যে বাস র্টমিনাল চালু করা হবে। ইতিমধ্যে কয়েক লাখ টাকার মাটি ভরাট করা হয়েছে। মাটি না পাওয়ায় বিলম্ব হচ্ছে।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার কাজী লুতফুল হাসান জানান বিষয়টি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। অতিদ্রুত মেয়রের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি সড়কে গাড়ী পার্কিং করে যাত্রী সেবার বিষয়টি কিভাবে নিরসন করা যায় তার ব্যবস্থা করা হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। যেহেতু বাস র্টমিনালের জন্য জমি ক্রয় এবং অধিগ্রহণ করা হয়েছে, অল্প সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধান করা হবে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com