স্টাফ রিপোর্টারঃ সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর এলাকার ঘাঘট নদের ওপর পাকা সেতু না থাকায় ১০ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। গ্রামবাসী এখানে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছিলেন। এখন সেটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। সম্প্রতি শ্রীরামপুর এলাকার গিয়ে দেখা যায়, সাঁকোতে বাঁশের পাটাতন থাকলেও সেগুলো নড়বড়ে হয়ে গেছে। নড়বড়ে ভাঙ্গা সাঁকোয় ভোগান্তি সঙ্গী করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে গ্রামের মানুষ।
উপজেলার নলডাঙ্গা ও রসুলপুর ইউনিয়নের বুকচিরে বয়ে যাওয়া ঘাঘট নদের শ্রীরামপুরে কাটানদীর সংযোগস্থানে একসময় ডিঙ্গি নৌকায় মানুষ পারাপার করতেন। মানুষের দুর্ভোগ-ভোগান্তি নিরসনে ওই স্থানে কয়েক বছর আগে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ করেন। প্রতিবছর গ্রামবাসীর চাঁদার টাকায় সেতুটি সংস্কার করা হয়। কিন্তু বাঁশগুলো পুরোনো হয়ে যাওয়ায় এটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর ওপর দিয়ে ঘাঘটের পশ্চিম এলাকার রহমতপুর, তেতুলিয়া ফরিদপুর, পদ্মপকুর, রসুলপুর, ছান্দিয়াপুর এবং পূর্ব এলাকার বামনডঙ্গা, সাহবাজ, নলডাঙ্গা, খামার দশলিয়া ও মিয়ার বাজারের মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। বর্ষার সময় নদীতে পানি বেশি থাকে। তখন ঝুঁকি নিয়ে ১০ গ্রামের মানুষকে যাতায়াত করতে হয়।
স্থানীয় কৃষক রিয়াজ মিয়া বলেন, উপজেলা শহর থেকে এখানকার ১০ গ্রামের মানুষকে আলাদা থাকতে হচ্ছে একটি সেতুর জন্য। এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষ উপজেলা ও জেলা সদরে যাতায়াত করেন। পাকা সেতু না থাকায় তাঁদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য নৌকায় করে ওপারে নিতে হচ্ছে, তারপর অন্যান্য যানবাহনে নেয়া হয় বাজারে। একটা সেতু থাকলে তাঁদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে তুলতে সুবিধা হতো।
রাকিব হাসান নামে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ঘাঘট নদের ওপর ব্রিজ না থাকায় গ্রামে কোনো যানবাহন চলাচল করে না। ফলে সবাইকে হেঁটে হেঁটেই স্কুল-কলেজে যেতে হয়।
রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে নলডাঙ্গা বন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে যেতে হয় এই ভাঙা সাঁকোর ওপর দিয়েই। এখানে সেতু নির্মাণ করা হবে, ভোটের সময় এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান প্রার্থীরা। কিন্তু নির্বাচিত হয়ে কেউ কথা রাখেনা, আর দেখা মেলেনা তাদের। এভাবে মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে যুগের পর যুগ কেটে গেছে। এই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
সাদুল্লাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাহারিয়া খান বিপ্লব বলেন, ইতোমধ্যে ঘাঘট নদের কাটানদী সংযোগস্থানটি পরিদর্শন করা হয়েছে। ওই এলাকার যোগাযোগব্যবস্থার সুবিধার জন্য ঘাঘট নদের ওপর একটি পাকা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।