বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১০ অপরাহ্ন

সুন্দরগঞ্জে বালু উত্তোলনের মহাৎসব হুমকিতে সমতল ভূমি

সুন্দরগঞ্জে বালু উত্তোলনের মহাৎসব হুমকিতে সমতল ভূমি

সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় থামছে না অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। হুমকিতে উপজেলার সমতল ভূমিসহ রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি। গত ছয় মাসের ব্যবধানে অবৈভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে ১২ লাখ টাকা জরিমানা, পাম্পসহ ৫০০টি মেশিন ও ২ হাজার ফুট পাইপ জব্দ করেছে ভ্রামম্যান আদালতের নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট। সর্বশেষ গত শনিবার উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নে তিস্তা নদী হতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের অপরাধে বাল্কহেড মালিক চিলমারি উপজেলার রমনা গ্রামের তৌহিদুল ইসলামের ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি মাহমুদ আল হাসান।
উপজেলায় বালু মহাল না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ও অসাধু ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে বালু ক্রয় করে অবকাঠামো নির্মাণ করছে সাধারণ মানুষ এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি উপজেলার তারাপুর ও হরিপুর ইউনিয়নে নির্মাধীন তিস্তা সোলার প্যানেল এবং তিস্তা পিসি গার্ডার সেতর জন্য বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রভাব বিস্তার করে তিস্তা নদী হতে বালু উত্তোলন করছে। বৈধ কাগজপত্রাদি দেখাতে না পারায় বেশ কয়েক দফা উপজেলা প্রশাসন পাম্পসহ মেশিন ও পাইপ জব্দ এবং জরিমানা করেছে।
উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের বালু ব্যবসায়ী সাজু মিয়া জানান, সাধারণ মানুষের বসতবাড়ি নিমার্ণের জন্য স্থানীয়ভাবে পরিত্যক্ত জমি লিজ নিয়ে বালু উত্তোলন পূর্বক বিক্রি করে আসছিলাম। বিভিন্ন ভাবে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসন কয়েক দফা প্রায় দেড় লাখ টাকা জরিমানা ও পাম্পসহ মেশিন জব্দ করে। এর পর থেকে আর সে বালু উত্তোলন করে না।
উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের দুই তলা বিশিষ্ট বসতবাড়ি নির্মাণের মালিক ফিরোজা বেগম জানান, বসতবাড়ি নির্মাণ সামগ্রীর মধ্যে বালু প্রধান উপকরণ। উপজেলায় বালু মহল না থাকায় স্থানীয়ভাবে বালু সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। সে কারণে পঞ্চগড়, দিনাজপুর জেলা হতে বালু সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এতে করে নির্মাণ ব্যয় বাড়ছে দ্বিগুন হারে। নিজস্ব জমি হতে বালু উত্তোলন করা যাচ্ছে না। সে কারণে উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে।
পৌর সভার ঠিকাদার জাহাঙ্গীর হোসেন সরকার জানান, নির্মাণ কাজের জন্য বিভিন্ন গ্রেডের বালুর প্রয়োজন। বরাদ্দে বালুর দাম ধরে দেয়া রয়েছে। কিন্তু সব বালু জেলার বাহির হতে নিয়ে আসলে ঠিকাদারী কাজে লোকসান হবে। সে কারণে বিশেষ করে উপজেলার তিস্তা নদী হতে ভেটি বালু উত্তোলনের ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন।
সুন্দরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মনিন্দ্র নাথ মোদক জানান, যত্রতত্র বালু উত্তোলন পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পাম্প মেশিনের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ থেকে বালু উত্তোলন করলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে ভুমিকম্পনে ওই এলাকা দেবে গিয়ে বসতবাড়ি, বাস্তাঘাট ও সমতল ভুমির ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। সে কারণে ভুমি আইন মেনে বালু উত্তোলন করতে হবে।
উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি মাহমুদ আল হাসান জানান, বালুমহাল ও ভূমি ব্যবস্থাপনা আইন মোতাবেক ব্যক্তি নিজে তার জমি হতে বালু উত্তোলন করতে পারবে না। বালু উত্তোলনের কারণে প্রাকৃতি দুযোগে ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। বালুমহাল ঘোষণার মত জায়গা উপজেলায় নেই। সে কারণে বালু মহাল ঘোষণা সম্ভাব হচ্ছে না। গত ছয় মাসে উপজেলায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা, পাম্পসহ ৫০০টি মেশিন ও ২ হাজার ফুট পাইপ জব্দ করা হয়েছে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com