স্টাফ রিপোর্টারঃ চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত ২৯ গাইবান্ধা -১ সুন্দরগঞ্জ আসনের আওয়ামীলীগ দলীয় জাতীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামীদের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। ১৮ নভেম্বর সোমবার ও ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার দুই দিনে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিকের আদালতে স্বাক্ষী ও আসামীদের উপস্থিতিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয় । ২৮ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
আদালতে আসামীদের মৃত্যুদন্ড সহ সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী। এসময় আসামীদের আইনজীবীরা সাবেক জাপা দলীয় এমপি ডাঃ কর্ণেল (অবঃ) আব্দুল কাদের খানকে নির্দোষ দাবি করে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের আগে কঠোর নিরাপত্তায় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সাবেক এমপি আব্দুল কাদের খান সহ অভিযুক্ত ৮ আসামীর মধ্যে ৬ জনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এর আগে এ মামলার আসামী সুবল কসাই কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় মারা যায়। এছাড়া এখনো পলাতক রয়েছে আসামী চন্দন কুমার। যুক্তিতর্ক শেষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন,মামলার এজাহার আসামীদের এবং সাক্ষীদের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি, অস্ত্র উদ্ধারসহ নানা দিক আলোকপাত করে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। মামলার রায় ২৮ নভেম্বর ঘোষণা হবে বলে আদালত জানিয়েছে।আদালতে অভিযুক্তদের ফাঁসিসহ সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে বলে আশা করেন এ আইনজীবী।
তবে আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ বলেন,এমপি লিটন হত্যার সময় সাবেক এমপি কাদের খান দেশের বাইরে ছিলেন। তাতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন বলে আশা করেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল প্রথম দফায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। মামলার বাদী, নিহতের স্ত্রী, তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৫৯ জনের সাক্ষী গ্রহন করেছেন আদালত। ৩১ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। লিটন হত্যা মামলার সাথে সম্পৃক্ত অস্ত্র আইনের মামলায় গত ১১ এপ্রিল সাবেক এমপি কাদের খানের যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেন আদালত।
উল্লেখ্য ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের সাহাবাজ গ্রামের মাষ্টারপাড়ায় নিজ বাড়িতে দূর্বৃত্তের গুলিতে আহত হন এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত এমপি লিটনের ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী ৪/৫ জন কে অজ্ঞাতনামা আসামী করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সাবেক এমপি কাদের খান সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগ পত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ মামলায় গ্রেফতারের পর থেকেই আসামীরা গাইবান্ধা কারাগারে রয়েছেন। এরা হচ্ছেন সাবেক এমপি কাদের খান, কাদের খানের পিএস শামসুজ্জোহা, গাড়ী চালক হান্নান, ভাতিজা মেহেদী, শাহীন,ও রানা। মামলার বাদী ফাহমিদা বুলবুল কাকলী জানান,আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা করছি।