বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০৯ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ সাদুল্লাপুর উপজেলার হাটবাজারে এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম নেমেছে অর্ধেকে। এতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষক। অপরদিকে লাভ গুনছেন পাইকার। তবে কম দামে আলু পেয়ে খুশি ভোক্তা।
কৃষি বিভাগ বলছে, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় আগাম আলুর ফলন ভালো হয়েছে। তবে উপযুক্ত দাম না পেয়ে কৃষক হতাশ। অনেকে উৎপাদন খরচ না ওঠার শঙ্কায় রয়েছেন। এমন হলে আগামী মৌসুমে আগাম আলুর চাষ কমে যাবে। সাদুল্লাপুর বাজারের পাইকার মাহবুবুর রহমান জানান, গত বুধবার প্রতি পাল্লা (স্থানীয়ভাবে ৫ কেজিতে এক পাল্লা) আলু বিক্রি করেছেন ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। তাতে প্রতি কেজির দাম দাঁড়ায় ২৩ থেকে ২৪ টাকায়। তিনি খুচরা পাইকারের মাধ্যমে আলু সংগ্রহ করেছেন ১০৫ থেকে ১১০ টাকা পাল্লা। আবার খুচরা পাইকাররা কৃষকের কাছ থেকে কিনছেন ৯৫ থেকে ১০০ টাকা পাল্লা। এভাবে হাতবদল হয়ে বাজারে আসছে আলু। প্রত্যন্ত গ্রামের হাটবাজারে আলুর দাম আরও কম।
ক্রেতা জামির হোসেন বলেন, এক মাস আগে আলু কিনেছেন প্রতি কেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। এখন নতুন আলু পাচ্ছেন ২৪ থেকে ২৫ টাকায়।
তীলকপাড়া গ্রামের কৃষক আজাদুল ইসলাম বলেন, আগাম চাষের জন্য প্রতিকেজি আলুর বীজ কিনতে হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। কিন্তু নতুন আলু বিক্রি করে উপযুক্ত দাম পাচ্ছি না। মাসের ব্যবধানে দাম অর্ধেকের বেশি কমেছে। এমন বাজারমূল্য অব্যাহত থাকলে লোকসান গুনতে হবে।
ধাপেরহাট এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, লোকসান যাতে কম হয়, সেজন্য ক্ষেতের আলু দ্রুত তুলে বিক্রি করছেন কৃষকরা। এতে হাটবাজারে নতুন আলুর আমদানি বেড়েছে। কমেছে দাম। লাল পাকড়ি, কার্ডিনাল, সাদা হল্যান্ড ও বার্মা জাতের নতুন আলু সাদুল্লাপুরের হাটবাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আগাম উৎপাদিত এসব আলু কৃষকরা ২০ টাকা কেজির কমে বিক্রি করলে লোকসান হবে বলে জানান উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বসুনিয়া।
তিনি বলেন, আগাম রোপণের কারণে বেশি দামে বীজ আলু কিনতে হয়েছে। এর সঙ্গে সার-কীটনাশক, সেচ ও দিনমজুর খরচ মেলালে এলাকাভেদে প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের খরচ পড়েছে ১৮ থেকে ১৯ টাকা। কিন্তু দাম যেভাবে কমেছে, তাতে উৎপাদন খরচ তোলাই দায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মতিউল আলম বলেন, উপযুক্ত দাম না পেলে কৃষকরা চাষাবাদে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। এ জন্য সবজি হিমাগার স্থাপনসহ উৎপাদিত সবজি রপ্তানির উদ্যোগ নিলে তারা উপকৃত হবেন।