স্টাফ রিপোর্টারঃ সাদুল্লাপুর উপজেলায় অনুমোদন ছাড়াই চলছে অর্ধ-শতাধিকেরও বেশি স’মিল। এতে সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব । অপরদিকে শব্দ দূষণসহ পরিবেশের মারাত্বক ক্ষতির হুমকিতে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। এদিকে নিয়ম বহির্ভুত যত্রছত্র এ সব স’মিল স্থাপনের কারনে বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পাশে কাঠের গুড়ি রাখা হচ্ছে এতে জনসাধারনের চলাচলের অসুবিধার সৃষ্টি হলেও রাস্তার পার্শ্বে ও আবাসিক স্থানের স’মিল গুলো থেকে কাঠের গুড়ো উড়ে এসে আবাসস্থলসহ ঢুকে পড়ছে কোমলমতি ছাত্র/ছাত্রীসহ পথচারীদের চোখে । ফলে বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকি ও যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে । সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, স’মিল স্থাপনের ক্ষেত্রে বিধিতে বলা হয়েছে সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপুর্ন কোন স্থানের ২০০ মিটারের মধ্যে এবং সরকারী বনভুমির সীমানা হতে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে স’মিল স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া সকাল ৬টার পুর্বে এবং সন্ধা ৬টার পরে স’মিল চালানো যাবেনা এবং স’মিল চালানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে লাইসেন্স গ্রহন বাধ্যতামুলক করা হয়েছে । কে শোনে কার কথা কর্তৃপক্ষের নজরে আসলেও নেই কোন পদক্ষেপ। বিধি নিষেধ থাকলেও বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকির অভাবে রাস্তার পার্শ্বে, আবাসিক স্থানে বানিজ্যিক এলাকা ও বন বিভাগের আওতাধীন এলাকাতেও স্থাপিত হয়েছে এ সব স’মিল এবং নির্বিগ্নে চলছে এর কাঠ কর্তন। এ সুযোগে উপজেলার স’মিল হতে মাসোয়ারা নিয়ে পকেট ভারী করার অভিযোগ উঠলেও অস্বিকার করছে উপজেলার বন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তাদের সামান্য উৎকোচের বিনিময়ে সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব। সরেজমিন দেখা গেছে, সাদুল্লাপুর উপজেলা সদর মেইন রোড সংলগ্ন এলাকাসহ কামারপাড়া, বাগচি, বনগ্রাম, ইদ্রাকপুর, নলডাঙ্গা, এনায়েতপুর, পিরপুর, ভাতগ্রাম, বকশিগঞ্জ, মিরপুর, লালবাজার, কান্তানগর, মাদারহাট, বকশিগঞ্জ, ধাপেরহাটসহ বিভিন্ন হাট বাজার ও প্রত্যন্ত এলাকায় বেশি ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সন্নিকটে দিব্বি চলছে স’মিলগুলো। বন আইন ১৯২৭ ও তৎপ্রণীত স’মিল (লাইসেন্স) বিধিমালা ২০১২ অনুযায়ী, কোন স’মিল মালিক লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। লাইসেন্স নেয়ার পর থেকে প্রতিবছর তা নবায়ন করতে হবে। তবে, সাদুল্লাপুর উপজেলায় এ চিত্র একেবারেই ভিন্ন এখানে স’মিল স্থাপিত হওয়ার পর থেকে মাত্র ১ টি ছাড়া অনুমোদনহীন ভাবে চলছে অর্ধশতাধিকেরও বেশি স’মিল। একযুগেরও বেশি লাইসেন্স বিহীন স’মিল গুলো বন্ধ করার কোন উদ্যোগও চোখে পরেনি। জনমনেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে লাইসেন্স ছাড়া কেমনে চলে এসব প্রতিষ্ঠান ? আর বিদ্যুত সংযোগই বা পায় কি ভাবে ? লাইসেন্স না থাকার ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১জন স’মিল মালিকের সঙ্গে কথা হলে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন লাইসেন্স ছাড়াই তো চলছে, করবো কয়েকদিনের মধ্যেই। সাদুল্লাপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন আমার জানা মতে স’মিল গুলোর মধ্যে ১টি ছাড়া বাকি স’মিল গুলোর কোন লাইসেন্স নেই । সবার কাছে গিয়ে বলেছি লাইসেন্সের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শ্রীঘ্রই স-মিল গুলোর ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে । এ ব্যাপারে জেলা বন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শরিফুল এর সঙ্গে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারনে আমরা এ ব্যাপারে অভিযানে নামতে পারিনি খুব শ্রীঘ্রই অবৈধ স’মিলের ব্যাপারে অভিযান চালানো হবে।