বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন
সাঘাটা প্রতিনিধিঃ সাঘাটায় বাঙ্গালী নদীর পানি কমার সাথে সাথে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নেওয়ায়, করোনা সংকটে নদী পাড়ের বাসিন্দারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে বাঙালী নদীর পানি কমার সাথে সাথে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নেওয়ায়, ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো ঘর ও আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ ঘর সরাচ্ছেন। কেউ বা গাছ কাটচ্ছেন। গত দু‘দিনে কয়েকটি বড় গাছ ও ১০টি পরিবারের বসত ঘড় নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে স্কুল, বসত বাড়ি, বাজারসহ শত শত বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন নদী পাড়ের মানুষ। স্থানীয় আবুল হোসেন জানান, আমার দশ বিঘা আবাদি জমি নদীতে চলে গেছে। বাড়ি ভেঙে গেছে তিন বার। পুস্পরানী বলেন,বাড়ির ভিটে পর্যন্ত নাই, আমাদের দেখার কেউ নেই । এলাকাবাসী নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বন্যার পানি কমতে শুরু করায় তিস্তায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। টানা ভাঙনে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর পুটিমারী, ভাটি কাপাসিয়া বাদামের চর, মাদারিপাড়া, লালচামার গ্রামে এক হাজর একর ফসলি জমি ও এক হাজার বসত বাড়ি নদীগভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি ও বসতবাড়ি। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্যার পাশাপাশি ভাঙন অব্যাহত থাকায় নাকাল তিস্তা পাড়ের মানুষজন। উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার নদীর বিভিন্ন চরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পানি কমতে শুরু করায় নদীতে তীব্র স্রােত দেখা দিয়েছে। স্্েরাতের কারনে ভাঙনের ফলে তিস্তার বালু চরের সবুজের সমারহ ও বসতবাড়ি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। বর্তমানে তিস্তার চরাঞ্চলে বেগুন, মরিচ, পটল, করলা, শশা, তোষাপাটসহ নানাবিধ ফসলের সমাহার ছিল। কিন্তু সর্বনাশা তিস্তার ভাঙনে এবং বন্যার কারনে সেসব ফসল ঘরে তোলা হল না। কথা হয় শ্রীপুর ইউনিয়নের পুটিমারী গ্রামের আব্দুল মতিনের সাথে। তিনি বলেন তিস্তার ভাঙনে চরাঞ্চলবাসি দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ সময় তীব্র আকারে নদী ভাঙার কথা নয়। অথচ দীর্ঘদিন থেকে দফায় দফায় নদী ভাঙন চলছে। যার কারনে শ্রীপুর ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। চরের মানুষ তরিতরকারির আবাদ করে সংসার চালায়। কিন্তু নদী ভাঙন এবং বন্যার কারনে কৃষকরা মাথায় হাত দিয়ে বসেছে। তিনি আরও বলেন তার দুই বিঘা জমির তোষাপাট ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়া এক বিঘা জমির বেগুন ক্ষেতের প্রায় বেশিভাগ নদীতে বিলিন হওয়ার পথে। হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি জানান পলি জমে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে, সে কারনে সামান্য পানিবৃদ্ধি পেলে নিচু এলাকা প্লাবিত হয় এবং সারা বছর নদী ভাঙন অব্যাহত থাকে। নদী ভাঙন ঠেকাতে হলে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান নদী ভাঙনের কারনে এক হাজার একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন এবং বস্যার কারনে ১০ একর জমির তোষাপাট ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। উপজেলা নিবার্হী অফিসার কাজী লুতফুল হাসান জানা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মোতাবেক উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করেছে , তবে বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোডের নিবার্হী পরিচালক মোখলেছুর রহমান জানান নদীভাঙন রোধ একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা। তবে নদী সংরক্ষণের ব্যাপারে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে।