শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন
সাঘাটা প্রতিনিধি: সাঘাটা উপজেলার কামালেরপাড়া ইউনিয়নের শিমুল বাড়ী গ্রামের মৃত জামালের পুত্র আসাদুল ইসলাম। ১৭ বছর বয়স থেকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন নারিকেল গাছ ঝাড়ার (পরিষ্কার) কাজকে। এখন তার বয়স প্রায় ৬৭। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও জীবিকার তাগিদে এখনো তাকে ছুটতে হয় প্রত্যন্ত অঞ্চলে। একটি নারিকেল গাছে উঠে তিনি উপার্জন করেন ৫০ থেকে ১০০ টাকা। কেউ আবার গাছপ্রতি দেন দুয়েকটি নারিকেল। এগুলো বাইসাইকেল যোগে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেই চলে তার সংসার। ৫ ছেলে-মেয়েসহ ৭ সদস্যের সংসার আসাদুলের। প্রায় ৪৫ বছর ধরে নারিকেল গাছ পরিষ্কার করেই তিনি সংসার চালাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আসাদুলের প্রথমদিকে দিনমজুরি শুরু করলেও সেই কাজ তিনি বেশি দিন করতে পারেননি। ১৭ বছর বয়স থেকে শুরু করেন নারিকেল গাছে ওঠার কাজ। কখনো অন্যের গাছের নারিকেল পারা, আবার নারিকেল গাছ পরিষ্কার করাই হয়ে ওঠে তার পেশা।স্থানীয়রা জানান, এলাকার প্রায় সবার বাড়িতে নারিকেল গাছ রয়েছে। ভালো ফলন নিতে ৬ মাস পরপর গাছ ঝেড়ে নিতে হয়। এসব গাছ আসাদুল ঝেড়ে দেন। উচ্চতা ভেদে প্রতিটি গাছ পরিষ্কার বাবদ ৮০ থেকে ১০০ টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। তবে লোকটির বয়স বেশি হওয়ায় এখন তাকে গাছে তুলে দিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। আব্দুল্যা নামের এক ব্যাক্তি বলেন, আসাদুলের অনেক দিন থেকে এই কাজ করেন। গ্রামের নারিকেলের গাছের কাজ করেই তার সংসার চলে। বয়সের ভারে এখন আর তেমন কাজ করতে পারেন না। স্থানীয় সরকার বেষ্টনীর মাধ্যমে যদি তাকে সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া হয়, তাহলে তার বাকিটা জীবন ভালো চলবে। গাছী আসাদুল বলেন, নারিকেল গাছ পরিষ্কারের জন্য অনেকের ডাক পাই। প্রতিদিন এ কাজটি করে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা রোজগার হয়। এ দিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনো রকম বেঁচে আছি। তবে আগের মতো এখন আর শরীর চলে না। বয়সের কারণে গাছে ওঠালে হাত-পা থরথর করে কাঁপে। আমাকে যদি সরকারি-বেসরকারিভাবে সহযোগিতা করা হতো, তাহলে হয়তো শেষ বয়সে একটু শান্তিতে থাকতে পারতাম।