শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৮ অপরাহ্ন

মিথ্যা বলায় নির্বাহী প্রকৌশলীকে ঝাড়লেন ডেপুটি স্পিকার

মিথ্যা বলায় নির্বাহী প্রকৌশলীকে ঝাড়লেন ডেপুটি স্পিকার

স্টাফ রিপোর্টারঃ ফুলছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বাঁধে। সেখানে দুর্গত মানুষদের সুপেয় পানির জন্য পাঁচটি নলকূপ বসিয়ে গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুর ইসলাম চৌধুরী গল্প শোনালেন পঞ্চাশটির। আবার একটি শৌচাগার নির্মাণ করেই জানালেন, নির্মাণ করা হয়েছে ৯টি শৌচাগার।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, হুইপ, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনে বড় গলায় নিজের সাফল্যের গান গাইলেন। এতে খোদ ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার তোপের মুখে পড়েন গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম চৌধুরী।
নির্বাহী প্রকৌশলীকে উদ্দেশ্য করে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি বলেন, আমিতো গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খবর নিয়েছি। আপনি নলকূপ বসিয়েছেন পাঁচটি। শৌচাগার নির্মিত হয়নি একটিও। মিথ্যা বলবেন না। ডোন্ট টেল এ লাই। কেন মিথ্যা বলছেন?
নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম চৌধুরীকে ভর্ৎসনা করে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার প্রতিবাদ জানানোর সময় সমস্বরে সভার পেছন থেকে ভেসে আসে, স্যার উনি (আমিনুল ইসলাম) একজন মিথ্যাবাদী।
হটাৎ উত্তপ্ত সভাকক্ষ। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এমন দৃশ্যরই অবতারণা হয় গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভায়।
গাইবান্ধা পৌঁছে প্রথমেই জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান। সভার শুরুতেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থার প্রতিনিধির কাছে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি এবং ত্রাণ কার্যক্রম সম্পর্কে জানার পাশাপাশি দুর্গতদের চাহিদার বিষয়টি জানতে চান।
গাইবান্ধার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম চৌধুরী মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে শুরু করেন তার কার্যক্রমের বর্ণনা। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ফুলছড়িতে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে অসংখ্য বন্যা দুর্গত মানুষ, সেখানে তাদের জন্য নলকূপের পাশাপাশি ৫০টি শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে।
এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান বলেন, যেহেতু নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক উঠেছে তাই আমি বলব, আজকের মধ্যেই তিনি সরেজমিনে পরিদর্শনে যাবেন এবং কতগুলো শৌচাগার এবং নলকূপ বসেছে মন্ত্রণালয়কে জানাবেন।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রোকসানা বেগমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব মোঃ শাহ্ কামাল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র এ্যাড. শাহ্ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বেসরকারি ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান এমপি বলেন, গাইবান্ধার বানভাসী মানুষের জন্য ৫০০ বান্ডিল টিন, ৫০০ তাবু (ত্রিপল), ১৫ লাখ টাকা, ২০০ মেট্রিক টন চাল ও শিশু এবং গবাদিপশুর জন্য আরও ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসময় আ’লীগ সরকার বর্ন্যাত মানুষের পাশে অতীতেও ছিলো বর্তমানেও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে বলে জানান।
তিনি আরো বলেন, বন্যা আক্রান্ত এলাকা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় সরকার সর্ব্বোচ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। সেই লক্ষ্যে গাইবান্ধা শহর রক্ষায় ৫০ কিঃমিঃ একটি বেড়ি বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধটি নির্মাণ কাজ দ্রুতই শুরু করা হবে। এই বাঁধটি নির্মাণ হলে একদিকে যেমন গাইবান্ধা শহর রক্ষা হবে তেমনি বর্ন্যাত মানুষও ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচবে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com