শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:১৫ অপরাহ্ন

ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত: গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত: নিম্নাঞ্চল প্লবিত

ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত: গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত: নিম্নাঞ্চল প্লবিত

স্টাফ রিপোর্টারঃ ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার নদ নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বিপদসীমার ৩৭ সে.মি., তিস্তা ৯ সে.মি ও ঘাঘট নদীর পানি ১১ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া যমুনা, তিস্তা ও করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমা ছুই ছুই করছে। ফলে সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা এবং সদর উপজেলায় নদী তীরবর্তী ও বিভিন্ন চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে ওইসব এলাকার বিভিন্ন ফসলী জমি ও রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের নিচু এলাকাগুলো তলিয়ে যাওয়ায় সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর উড়িয়া, কাবিলপুর, গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারী, গলনা, ফুলছড়ি ইউনিয়নের দেলুয়াবাড়ী, ফজলুপুর ইউনিয়নের পূর্ব খাটিয়ামারী, উজালডাঙ্গা, বাজে তেলকুপি, এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের হরিচন্ডি, জিগাবাড়ী, সন্যাসীর চর এবং সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া ও শ্রীপুর ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকায় তিস্তার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এদিকে গত এক সপ্তাহে ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জের ওইসব এলাকায় শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে।
ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ জানান, সদর উপজেলার রায়দাসবাড়ি, ফুলছড়ি উপজেলার দেলুয়াবাড়ি, জামিরা, গজারিয়া ইউনিয়নের গলনা, ফজলুপুর এখন বন্যা কবলিত। এই সমস্ত এলাকায় নদী ভাঙনও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই সমস্ত এলাকায় এ পর্যন্ত ১২০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, নদীর পানি যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর বাঁধ হুমকির মুখে পড়বে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

সাঘাটা প্রতিনিধি জানান, গত এক সপ্তাহের একটানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে ব্রহ্মপুত্র ও বাঙালীসহ বিভিন্ন নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। সেই সাথে নদীর তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে সাঘাটা উপজেলার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিচু এলাকাসহ চরাঞ্চলগুলোতে পানি উঠতে শুরু করেছে। ফলে বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত ও অস্থায়ী নৌ-ঘাটগুলো তলিয়ে গেছে। সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, ঘুড়িদহ, সাঘাটা, জুমারবাড়ী, বোনারপাড়া, কচুয়া ইউনিয়নের নিচু এলাকাগুলো তলিয়ে যাওয়ায় ওইসব এলাকায় উঠতি ফসল ও বীজতলা তলিয়ে গেছে। সেই সাথে গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, সকল নদ নদীর পানি বাড়ছে। তবে এখনও প্রতিটি নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢল এই হারে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যারও আশংকা রয়েছে। প্রতিবছর বর্ষায় নদীর ফেঁপে ফুলে ওঠে। পানিতে থই থই করে নদী পাড়ের মানুষের বাড়ির আঙ্গিনা। পানি বাড়লেও ভাঙ্গন এবং কমলেও আরও তীব্রতা শুরু হয় ভাঙ্গনের। ভাঙ্গনে প্রতি বছর নদী গ্রাস করে শত শত একর জমি। হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী জানান, আমার হলদিয়া ইউনিয়নের কালুরপাড়া, কুমারপাড়া, দক্ষিণ দিঘলকান্দি, গোবিন্দপুর, হলদিয়া, নলছিয়া, বেড়া গ্রামের নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে প্রায় শতাধিক বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার।
কঞ্চিবাড়ি (সুন্দরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারও পরিবার। অনেক পরিবার তাদের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। চরাঞ্চলের বসতবাড়ি ডুবে যাওয়ায় অনেক পরিবার টিনের চালার উপর বসবাস করছে। গত শুক্রবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সোলেমান আলী কাপাসিয়া ইউনিয়নের উত্তর লালচামার, লালচামার, উজান বুড়াইল, ভাটি বুড়াইল এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসময় তাঁর সাথে ছিলেন, কাপাসিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম। বাড়ছে পানি ডুবছে চর। যার কারণে নিচু এলাকার পরিবারগুলো পানিবন্দি ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গৃহপালিত পশু পাখি নিয়ে বিপাকে পড়ে চরাঞ্চলবাসী।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com