বাদিয়াখালী প্রতিনিধিঃ বাদিয়াখালীতে জমিতে বোরো চারা রোপনে ব্যস্ততা কাটিয়ে উঠার পর গ্রামকে গ্রাম সবুজের সমাহার থেকে এখন সোনালী রঙ্গের পাকা ধান কাটা মাড়াই নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে কৃষক কৃষাণীরা। কিন্তু সমস্যায় পড়েছে দিন মজুর সংকটের ফলে। বর্তমানে দিন মজুররাও অন্যের বর্গা নেয়া ক্ষেতের পাকা ধান কাটা মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। দিন মজুরের দাম সাতশত টাকার ফলে ধান কাটা মাড়াই নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। গত মাস তিনেকের পরিশ্রম আর অর্থ খরচে উৎপন্ন ফসল ঘড়ে তুলতে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকরা। এমনই পরিস্থিতিতে আকাশ একটু মেঘাচ্ছন্ন ভাব হলেই উৎকন্ঠা বা হাহুতাশে পরে যায় তারা। কখনও কাল বৈশাখী ঝড়ের কবলে ক্ষেতের পাকা ধান নষ্ট হয়ে গেলে পরিশ্রম আর অর্থ সবই যাবে বিফলে। দিন মজুর সংকট সময়ে পাকা ধান ঘড়ে তুলতে অন্য এলাকা থেকে ধান কাটা মাড়াই মেশিন নিয়ে এসেছে। সেই মেশিনে ধান কাটা মাড়াই চলছে পুরোদমে। ইউনিয়নের তালুক রিফাইতপুর গ্রামের জনৈক কৃষক জানান, তিনি ৫বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন কিন্তু দিন মজুর অভাবে এখনও পাকা ধান ঘরে তুলতে পারেনি বলে হতাশায় ভুগছেন। তিনি জানান, বুক ভরা আশা নিয়ে উৎপাদিত ফসল কোন রকম ঝড়ঝাপটার আগেই ঘড়ে তুলতে না পারলে পরিবার পরিজন নিয়ে সারাটা বছর অভাব অনটনে কাটাতে হবে। কৃষকের এই হতাশাগ্রস্ত সময়ে ২/৩দিন হল এলাকায় সুবিধাজনক ভাবে ধান কাটা মাড়াই মেশিন নিয়ে এসেছে। তবে সেই মেশিন দিয়েও ধান কাটা মাড়াই নিয়ে হুমড়ি খাচ্ছে কৃষকরা। অনেকেই জানান, জমিতে চারা রোপন থেকে শুরু করে এখন কাটা মাড়াই পর্যন্ত বিঘা প্রতি খরচ হচ্ছে ৭/৮হাজার টাকা। দিন মজুর দ্বারা চুক্তিতে ধান কাটা মাড়াই করতে লাগছে বিঘাপ্রতি চার সাড়ে চার হাজার টাকা। তবে কিছুটা কম খরচে ধান কাটা মাড়াইয়ে বৈজ্ঞানিক যুগে আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরী মেশিন দিয়ে ধান কাটা মাড়াই করতে বিঘা প্রতি খরচ লাগছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। মেশিনে কাটা মাড়াইয়ের সুবিধা থাকলেও জমির পল (খড়) সরানোর জন্যও আবার খরচ হচ্ছে হাজার বারোশ টাকা। সব মিলিয়ে বিঘা প্রতি ধান উৎপন্নের খরচ হচ্ছে প্রায় ৭/৮ হাজার টাকা। এলাকার কৃষক রেজাউল জানান, এবারে বিঘাপ্রতি উৎপন্ন ২৮ ধান পাওয়া যাচ্ছে ১৪/১৫ মণ। আর হাইব্রিড ধান বিঘাপ্রতি ২০/২২ মণ। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ ধানের দাম ৬৫০ টাকা থেকে ৭শ টাকা। অনেক কৃষকই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন বাজারে চাল কিনে ভাত খাবো, তবু নানা বিধ ঝামেলা, দিন মজুর সংকট আবার কাল বৈশাখী ঝড়ের চিন্তা থেকে বিরত থাকতে ধান চাষাবাদ ছেড়ে দেওয়াই ভালো।