সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাদিয়াখালি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি এখন শুধু নামেই একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র । এখানে নেই কোনো চিকিৎসক ও জনবল। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ১০ শয্যার অভ্যন্তরীণ সেবা। বহির্বিভাগে প্রতিদিন রোগী আসলেও পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসক না থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালি ইউনিয়নে ১৯৬৬ সালে ৬৬ শতাশং জমির ওপর ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়। তখন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে দু’জন চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পদে ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত ছিলেন।
পরবর্তীতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে সরকারের নজর কমতে থাকলে ক্রমান্বয়ে সেখান থেকে রোগীরা চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে থাকে। চিকিৎসকের অভাবে প্রায় এক যুগের বেশি সময় থেকে বন্ধ অভ্যন্তরীণ বিভাগ। ফলে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়ে যায়। এতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির জরুরি চিকিৎসার ওপর নির্ভরশীল বাদিয়াখালিসহ সাঘাটা ও ফুলছড়ির কয়েকটি ইউনিয়নের হাজারো মানুষ চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বর্তমানে বহির্বিভাগে রোগীদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালু থাকলেও চিকিৎসক ও জনবল না থাকায় সে কার্যক্রমটিও মুখ থুবড়ে পড়েছে। খাতা কলমে দুজন চিকিৎসকসহ ১১ জনের পদ থাকলেও দু-জন আয়া ও একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা দিয়েই চলছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির কার্যক্রম। আবার সেই দায়িত্বরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকাও রয়েছেন দুটি ইউনিয়নের অতিরিক্ত দায়িত্বে। অফিস করেন বাদিয়াখালি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে মাত্র সপ্তাহে দুইদিন। যে কারণে বহির্বিভাগে প্রতিদিন রোগী চিকিৎসা নেয়ার জন্য আসলেও তারা হতাশ হয়ে ফিরে যান।
অপরদিকে, ব্যবহার না হওয়ায় এর সু-বিশাল চত্বরটি পরিণত হয়েছে গো-চারণ ভূমিতে। স্টাফ কোয়ার্টার, ভবনসহ অন্যান্য অবকাঠামো অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এসব পরিণত হয়েছে জুয়ারি ও মাদকসেবীদের আড্ডা খানায়।
স্থানীয় বাসিন্দা কাজী আব্দুল খালেক জানান, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল ছিল। কিন্তু এখন কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। দ্রুত এটি সচল করে মানুষের দুর্ভোগ কমানো প্রয়োজন।
গাইবান্ধা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) প্রসেনজিৎ প্রনয় মিশ্র জনসাধারণের অসুবিধার কথা স্বীকার করে জানান, জনবল সংকটে বাদিয়াখালিসহ অন্যন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। চিকিৎসক ও স্টাফ নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে।
বাদিয়াখালি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী চিকিৎসক না থাকলেও প্রতিদিন এখানে ১০০ থেকে ১৫০জন রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ওষুধ দিয়ে থাকেন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা।