শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন

সাঘাটায় ৫ দফা বন্যার পানিতে কৃষকের সর্বনাশ

সাঘাটায় ৫ দফা বন্যার পানিতে কৃষকের সর্বনাশ

সাঘাটা প্রতিনিধিঃ সাঘাটা উপজেলার গাছাবাড়ী গ্রামের পত্রিকার হকার মোজাফ্ফর বেপারীর আকুতি বন্যাত হামার ৩ বিঘা জমির ধান তলে গেছে, এখন হামরা ক্যাঙ্কা করে ছোলপোল নিয়্যা বাঁচমো। বন্যাত হামার সব শ্যাষ হয়া গেছে। এভাবেই জমিতে গিয়ে তলিয়ে যাওয়া ধানের গুছি হাতে নিয়ে বিলাপ করেন।
শুধু মোজাফ্ফরই নন উপজেলার হাজার হাজার কৃষকের একই অবস্থা। এসব কৃষকের কেউ কেউ জমিতে বেগুন, মরিচ, রোপা আমন ধানের চাষ করেছিল। কিন্তু ৫ম দফা বন্যায় সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তারা কি করবে, তা বুঝে উঠতে পারছে না। দিশেহারা হয়ে পড়েছে উজেলার হাজার হাজার কৃষক। ৫ম দফা বন্যায় উপজেলার পদুমশহর, বোনারপাড়া, কচুয়া, কামালেরপাড়া, জুমারবাড়ী ইউনিয়নের অধিকাংশ বিস্তীর্ণ এলাকার উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে বন্যার পানিতে কৃষকের হয়েছে সর্বনাশ। দীর্ঘস্থায়ী বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় এসব ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে ৫টি ইউনিয়নের কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ১৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকায় মোট কৃষকের সংখ্যা ৮ হাজার ১শ’ ৩৫ জন। রোপা আমনের অর্জিত জমির পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৬শ’ ৬৮ হেক্টর। বন্যার আক্রান্ত জমির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯শ’ ৯৫ হেক্টর। পুরোপুরি জমির ফসল বিনষ্ট হয় ১ হাজার ৪৫ হেক্টর। আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয় ৯শ’ ৫০ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্থ মোট ফসলি জমির পরিমাণ ১ হাজার ৫শ’ ২০ হেক্টর। এতে ফসলি জমির ক্ষতির হার দাঁড়ায় ১২%। উৎপাদনে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬ হাজার ১শ’ ৫৬ মেঃ টন। মোট টাকার ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা।
সবজির অর্জিত জমির পরিমাণ ছিল ৪শ’ ৫০ হেক্টর, বন্যায় আক্রান্ত সবজি ক্ষেত ২০ হেক্টর, এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতি হয় ১৭ হেক্টর, আংশিক ক্ষতি হয় ০৬ হেক্টর, আংশিক ক্ষতির হার দাঁড়ায় ৫০%। মোট ফসলী জমির উপর ক্ষতির হার ৪.৫%। সবজি উৎপাদনে মোট ক্ষতির পরিমাণ ১শ’ ৭০ মেঃ টন, মোট টাকার ক্ষতির পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ৫১ লক্ষ টাকা।
মাসকালাই অর্জিত জমির পরিমাণ ছিল ৭৫ হেক্টর, বন্যায় আক্রান্ত মাসকালাই ক্ষেত ২৫ হেক্টর, এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতি হয় ২৫ হেক্টর। মোট ফসলী জমির উপর ক্ষতির হার ৩৩.৩৩%। মাসকালাই উৎপাদনে মোট ক্ষতির পরিমাণ ৪৫ মেঃ টন, মোট টাকার ক্ষতির পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ২২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে জমিতে জোঁ আসার পরেই সবজি ও সরিসার বীজ রোপনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হবে। এছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের কৃষি পূণর্বাসনের আওতায় আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com