শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৫২ অপরাহ্ন

বন্যার আগেই গোবিন্দগঞ্জের বামনহাজরা গ্রাম ভাঙ্গনের শিকার

বন্যার আগেই গোবিন্দগঞ্জের বামনহাজরা গ্রাম ভাঙ্গনের শিকার

স্টাফ রিপোর্টারঃ বন্যা আসার আগেই নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে একটি গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি। অসময়ের এ নদী ভাঙ্গনে গত ১ সপ্তাহে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বাঙালী নদীর বাম তীরবর্তী গ্রাম বামনহাজরার মানচিত্র বদলে যেতে শুরু করেছে। দিন-রাত, প্রতিক্ষণই নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর, ভিটেমাটি আর কবরস্থান। এ গ্রামের একই পরিবারের ৪ মুক্তিযোদ্ধার ২ জনের কবরই ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে বাঙালী নদীর গর্ভে। অসময়ের হঠাৎ ভাঙ্গনে দিশেহারা গ্রামবাসীরা এ জন্যে বালুদস্যুদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের বামনহাজরা গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনের ১ কিলোমিটার উত্তরে দেওয়ানতলা রেলসেতুর পূর্বপাশের্^র এ গ্রামে কখনও নদী ভাঙ্গনের আশঙ্কা ছিল না। ওই রেল সেতুটিই ছিল তাদের গ্রামের রক্ষাবাঁধ। কিন্তু কয়েক বছর আগে রেলসেতুর কিছুটা উজানে দেওয়ানতলা সড়ক সেতু নির্মাণ করা হয়। এই সেতুটির কারণে কয়েক বছর ধরে বামনহাজরা গ্রামে নদী ভাঙ্গনের সূত্রপাত হয়। কিন্তু কয়েক বছর ধরে নদীর ওই এলাকায় বালুদস্যুরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। এ বছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই বিশালাকৃতির ড্রেজার দিয়ে নদী খননের কারণে নদীর অপর পাড়ের ডান তীরে খননের কাজ শুরু হতেই বিপর্যের শুরু হয় এখানে। গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে বালুর স্তুপ ও ড্রেজার এক ধরনের বাঁধে রূপ নিয়ে উল্টোদিকের এই গ্রামে তীব্র ভাঙ্গনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ওই গ্রামের বাসিন্দা মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, গত বছরের বর্ষা মৌসুমে এ গ্রামের একই পরিবারের ৪ মুক্তিযোদ্ধার ২ জনের কবরই তলিয়ে গেছে বাঙালী নদীর গর্ভে। প্রশাসনের কাছে অনেক আবেদন করেও গ্রামটির ভাঙ্গন প্রতিরোধে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বছর বর্ষা আসার আগেই ৪ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ও বামনহাজরা গ্রামের বাসিন্দাদের ৮-১০টি বাড়ি নদীতে তলিয়ে গেছে গত ১ সপ্তাহের মধ্যে। কিছুটা স্বচ্ছল পরিবারগুলো অন্যত্র বাড়ি সরিয়ে নিলেও অসচ্ছল ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো ভিটেমাটি হারিয়ে একরকম পথে বসেছে। ভাঙ্গনরোধে বর্ষা মৌসুমের আগেই দ্্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে গ্রামটির পাশাপাশি দেওয়ানতলা রেলসেতুটিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে রেল যোগাযোগ বিঘিœত হয়ে যাবে।
এ দিকে অসময়ে নদী ভাঙ্গনের খবর পেয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রেজাউর রহমান, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম প্রধান ও ইউপি সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা ভাঙ্গনকবলিত এলাকাটি পরিদর্শন করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ হোসেন বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। জাতীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এখানকার ভাঙ্গনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ আজ থেকেই প্রাথমিক কর্মকান্ড শুরু করেছেন।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com