স্টাফ রিপোর্টারঃ দুর্যোগ ও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা ফুলছড়ি উপজেলার সাত ইউনিয়নে গ্রাম পুলিশরা ২৪ মাসের থানায় হাজিরার জন্য যাতায়াত ও দৈনিক ভাতা পাচ্ছে না। সম্প্রতি যাতায়াত ও ভাতার টাকার দাবিতে গ্রাম পুলিশরা একটি লিখিত আবেদনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করেন।
গ্রাম পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মোট ৭০ জন গ্রাম পুলিশ সদস্য। তাঁদের মধ্যে ৭ জন দফাদার এবং ৬৩ জন মহল্লাদার রয়েছেন। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী দফাদারেরা প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা ও মহল্লাদাররা ৬ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। এছাড়া ৭টি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ সদস্যরা থানায় প্রতি মাসে চার দিন হাজিরার নিয়ম রয়েছে। সে অনুযায়ী প্রতিদিন ৩০০ করে মোট ১২শ টাকা হাজিরা ভাতা ধরা রয়েছে। কিন্তু ২৪ মাস ধরে সেই হাজিরা ভাতা পাচ্ছেন না।
গ্রাম পুলিশের সদস্যরা মূলত কাজ করে থাকেন ইউনিয়ন পরিষদে। ইউনিয়ন পরিষদের নিরাপত্তাসহ চেয়ারম্যানের অন্যান্য কাজ তারা করে থাকেন। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন নির্বাচন, বিভিন্ন দুর্যোগে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করা ও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন তারা। গ্রাম পুলিশে দু’টি পদ আছে। একজন দফাদারের (প্রধান) নেতৃত্বে ৯ জন (চৌকিদার) সদস্য কাজ করে থাকেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ভুক্তভোগী কয়েক জন জানান, জেলার অন্যান্য উপজেলার গ্রাম পুলিশরা এ যাতায়াত ভাতা ঠিকই পেয়েছে শুধু আমরা পাচ্ছি না। এই দাবিতে বিভিন্ন সময়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গেলে তিনি বলেন, কোষাগারে যাতায়াত ভাতা দেবার মত কোনো টাকা নাই এখন।
গজারিয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ নরেশ রবিদাস জানান, আমাদের জীবন-জীবিকা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অল্প বেতনে আমাদের সংসার চালাতে পারছি না। তিনি আরও জানান, গ্রাম পুলিশের সদস্য হিসেবে কাজ করার কারণে আমরা কোথাও কোনো কাজ করতে পারি না। কেউ আমাদের কাজ দেয় না- বলে আমরা সরকারি চাকরি করি। হাজিরার জন্য যাতায়াত ও দৈনিক ভাতা হিসেবে ৩০০ টাকা সেটাও ২৪ মাস ধরে পাচ্ছি না। আমরা খুব কষ্টে দিন পার করছি।
গ্রাম পুলিশ ফুলছড়ি উপজেলা কমিটির সভাপতি মোঃ মমতাজ উদ্দিন জানান, আমরা গ্রাম পুলিশরা থানায় সপ্তাহে একদিন হাজিরার জন্য যাতায়াত ও দৈনিক ভাতা হিসেবে ৩০০ টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত মোট ২৪ মাসের যাতায়াত ভাতার টাকা পায়নি।
ফুলছড়ি থানার ওসি মো: কাওছার আলী বলেন, গ্রাম পুলিশরা সপ্তাহে একদিন থানায় হাজিরা দেন। সে অনুযায়ী থানা থেকে প্রতিমাসের রিপোর্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। গ্রাম পুলিশদের থানায় হাজিরার জন্য যাতায়াত ও দৈনিক ভাতা পরিশোধ করার কথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। কি কারণে ২৪ মাসের বকেয়া রয়েছে তা আমার জানা নেই।