রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন
পলাশবাড়ী প্রতিনিধিঃ পলাশবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী কালিবাড়ী হাটে চামড়ার আমদানি কেনা-বেচার সোনালী অতীত শুধুই যেন স্মৃতি। এবারের বাজার মূল্য গত বছরের তুলনায় একটু হলেও ভালো। দেশের অন্যতম চামড়া কেনা-বেচার হাট পলাশবাড়ী পৌরশহরের ঐতিহ্যবাহী কালীবাড়ীহাট। সপ্তাহের প্রতি বুধবার চামড়ার হাটটি বসে আসছে।
শুধু উত্তরাঞ্চল নয় রাজধানী ঢাকা থেকে ট্যানারি শিল্প, আড়ৎদার, লেদার কোম্পানি সমূহ, ছোট-বড় ক্রেতা, স্থানীয় ক্রেতা-বিক্রেতা ছাড়াও চামড়া শিল্পের সাথে সম্পৃক্তরা হাটটিতে আসেন। সারাবছরের ধারাবাহিকতায় বিশেষ করে বছরের দুই ঈদে হাটটির আঙ্গিনা চামড়া বিক্রেতা এবং ক্রেতাদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। কিন্তু তেমনটি আর নেই।
এবারের কোরবানির ঈদ-উল-আযহা হয়েছে গত ৭ জুন। ঈদ পরবর্তী গত ১১ জুন চামড়া হাটে নির্দিষ্ট পরিমাণ চামড়া না আসায় হাটটি বসেনি। গতকাল বুধবার চামড়া হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারনায় সামান্য চাঙাভাব লক্ষ্য করা গেছে। এরআগে গত সোমবার দুপুর থেকে হাটটিতে অল্প পরিমাণে চামড়া আসা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত গতকাল বুধবার ভোর হতে চামড়া যাচাই-বাছাইয়ের সাথে কেনাবেচা শুরু হয়ে তা চলে রাত প্রায় ৯টা পর্যন্ত। ট্যানারি, লেদার কোম্পানি, মহাজন এবং কোম্পানীর প্রতিনিধিদের পদচারণা ঘটলেও এবারে কোরবানির চামড়ার মূল্য বলতে গেলে ছিল কিছুটা ভালো। এক্ষেত্রে গরুর চামড়ার বিনিময় মূল্য থাকলেও ছাগর-ভেড়ার চামড়া হয়ে পড়ে প্রায় মূল্যহীন।
হাট ইজারাদার সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের চেয়ে এবারও কোরবানীর চামড়ার আমদানী মোটামুটি ভালো তাই হাটটি একটু হলেও জমে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে হাটে আসা চামড়া ক্রেতা-বিক্রেতা মহাজন ও ফড়িয়াদের চরম হতাশ থেকে একটু হলেও মুক্তি মিলেছে। চামড়ার কাঙ্খিত দাম অন্ততঃ পূঁজি হারানোর হাত থেকে রক্ষা করেছে। তবে সরকার প্রদত্ত নির্ধারিত মূল্যের কোন তোয়াক্কাই করা হয়নি। সর্বোপরি লাভ না হলেও লগ্নিকৃত অর্থ ফিরে এসেছে। কোনো-কোনো ক্ষেত্রে মন্দ নয় ভালো রয়েছে বলে তারা জানান।
অন্যদিকে; বছরের পর বছর ট্যানারি মালিকদের নিকট টাকা পড়ে থাকায় স্বস্তিতে নেই পাইকাররাও। তারা ধার-দেনা করে মৌসুমি ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চামড়া কিনছেন। এমন পরিস্থিতির ধারাবাহিকতায় এ বছর চামড়া প্রকারভেদে ভালো মানের প্রতিটি গরুর চামড়া ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা থেকে সর্বনিম্ন ২শ’ টাকা পর্যন্ত কেনা বেচনা করতে দেখা যায়। এবারে পান্না লেদার, আরকে লেদার, রিলায়েন্স, আকিজ ও এপেক্স গ্রুপের প্রতিনিধি, এবিএস লেদার, বুশরা লেদার ও সাবিনা ট্যানারি ছাড়াও স্থানীয়দের মধ্যে মিনু মন্ডল, নান্নু মিয়া, মাহামুদ, আজাহার ও এমদাদুল হকসহ অন্যান্যদের চামড়া কিনতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য; দুর-দুরান্ত থেকে বিক্রেতারা হাটে আসে চামড়া নিয়ে। হাটটিতে এবারে অন্ততঃ ১৫ থেকে ২৫ হাজার পিস শুধুমাত্র গরুর চামড়ার আমদানি ঘটে। তবে প্রশাসন এবারও হাট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নে তৎপর ছিলেন।
থানা অফিসার ইনচার্জ জুলফিকার আলী ভুট্টো জানান, চামড়া বেচাকেনা এবং অর্থ লেনদেনে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে লক্ষ্যে পুলিশের কঠোর নজরদারি রয়েছে।