শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১২ পূর্বাহ্ন

নলডাঙ্গায় জনবসতিপূর্ন এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বাড়ী ঘর হুমকির মুখে

নলডাঙ্গায় জনবসতিপূর্ন এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বাড়ী ঘর হুমকির মুখে

নলডাঙ্গা (সাদুল্লাপুর) প্রতিনিধিঃ সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখে ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে দাপটের সাথে অবাধে জনবসতিপূর্ণ এলাকার কৃষি জমি ও পুকুরে স্যালো মেশিন স্থাপন করে বালু উত্তোলন করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চললেও দেখার যেন কেউ নেই।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব খামার দশলিয়া গ্রামের পাতিল্লাকুড়া বাজার সংলগ্ন কুঠিপাড়া , একই গ্রামের খামার দশলিয়া আলীম মাদ্রাসার পিছনে রিজু মিয়া নামের এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে, প্রতাপ গ্রামের শীলপাড়া, পশ্চিম খামার দশলিয়া গ্রামের ইটভাটা সংলগ্ন হিন্দু পাড়া ও শ্রীরামপুর প্রামানিক পাড়া নামক স্থান গুলো থেকে বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী বালু খেকো হাবু, জাহাঙ্গীর ,হাসান ও আমিরুল নামের এসব স্বার্থন্বেষী ব্যক্তিরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে অব্যাহত ভাবে দিবারাত্রি নির্বিঘেœ বালু উত্তোলন করে দেদারচ্ছে বিক্রি করে আসছেন। স্থানীয় একটি সুত্র জানায় মাঝে মধ্যে পুলিশ স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষনিক ভাবে অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলনের সরজ্ঞামাদি ভেঙ্গে দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয় । কিন্তু তারা ফিরে যেতে না যেতেই অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা আবারো পূর্বের ন্যায় বহাল তবিয়তে বালু উত্তোলন শুরু করেন। এর মধ্যে যদি আবার কখনও পরিবেশ পরিস্থিতি একেবারে বেগতিক হয় তখন সুচতুর এসব বালু ব্যবসায়ীরা পুলিশি ঝুঁট ঝামেলা এড়াঁতে তড়িঘড়ি করে স্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র গিয়ে একই কৌশলে বালু উত্তোলন করেন। স্থানীয়দের দাবি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নীরবতা ও তৎপরতা না থাকার সুযোগে বালু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। তাদের মতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা একটু সক্রিয় হলেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন দ্রুত রোধ করা সম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে কোন ভাবেই বালু উত্তোলন বন্ধ না হওয়ায় এলাকাবাসী অনতিবিলম্বে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। । জানা গেছে বালু খেকো চক্রটি গ্রাম গঞ্জের সহজ সরল মানুষদের নানা রকম লোভ লালসার ফাঁদে ফেলে তাদের কে কোন কিছু বুঝতে না দিয়ে বিশেষ চুক্তিতে নানাভাবে ভুলিয়ে ভালিয়ে বসত বাড়ীর আশেপাশে কৃষি জমি কিংবা পুকুরে স্যালো মেশিন স্থাপন করে বালু ব্যবসায়ীরা বীরদর্পে সেখান থেকে শতশত মিটার প্লাষ্টিকের পাইপ টেনে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন স্থানে খাল,পুকুর ও বসতবাড়ী ভরাট করছেন। এছাড়া এসব বালু ট্রাক্টটর ও ট্রলি যোগে বিভিন্ন স্থানে বেচাকেনা করা হয়। এমতবস্থায় ওই এলাকার বসতবাড়ী,কৃষি জমি, রাস্তা ,কালভার্ট,ব্রীজ ও গাছপালা হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে । শুধু তাই নয় বালু বহনকারী ট্রলি ও ট্রাক্টর গুলি গ্রামীন জনপদের কাঁচা সড়ক গুলো দিয়ে সার্বক্ষনিক চলাচল করায় এসব সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধ্বসে পড়ে অসংখ্য ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে এসব সড়ক দিয়ে এলাকার লোকজন ও রিক্স ভ্যান চলাচলে চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এ এলাকার অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের কে এ ব্যাপারে কেউ কিছু বলার বা প্রতিবাদ করার সাহস পায়না । কেউ কিছু বললেই তাকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হয়। স্থানীয় ইউ,পি সদস্য আবুল হোসেন ও হাবিজার রহমান পাটোয়ারী বলেন এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে কোন এক সময় এসব এলাকার আশে পাশে বাড়ী ঘর জমিজমা ও বৃক্ষাদি ভাঙ্গনের মুখে পড়ে যে কোন মুহুর্তে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া হারাতে পারে পরিবেশের ভারসাম্য । এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নলডাঙ্গা ইউনিয়ন ভুমি অফিসের ভুমি কর্মকর্তা সাইয়েদুল ইসলাম বলেন,এর আগেও বালু উত্তোলনের পাইপ ও মেশিন ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। তারপরেও বালু ব্যবসায়ীদের বার বার নিষেধ করার পরেও আমার অজান্তে গোপনে গোপনে এমন কাজ করছেন । সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন বিষয়টি ইউএনও কে জানান । ওনি ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: নবীনেওয়াজ বলেন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com