শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন

ধাপেরহাটে পলিথিনের ছাপড়া ঘরে আমেনার মানবেত জীবন যাপন

ধাপেরহাটে পলিথিনের ছাপড়া ঘরে আমেনার মানবেত জীবন যাপন

Digital Camera

সাদুল্লাপুর প্রতিনিধিঃ পলিথিনের বেড়া আর ফুঁটা টিনের ছাপড়া ঘরে বসবাস বৃদ্ধা আমেনা বেগমের। তিনি জীবিকার তাগিদে সারাদিন ঘুরেন অন্যের দুয়ারে দুয়ারে। বার্ধক্য বয়সে হারভাঙা পরিশ্রম করে জরাজীর্ণ বসতঘরে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে বৃদ্ধা আমেনার। ইউএনও-জনপ্রতিনিধিরা তাকে ঘর বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দিলেও, আজও তার ভাগ্যে জোটেনি স্বপ্নের সেই ঘরটি।
সরেজমিনে গতকাল সোমবার দুপুরে সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের বোয়ালীদহ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় আমেনা বেগমের করুনদশা। এসময় ছাপড়া ঘরে পলিথিন দিয়ে বেড়া বানাচ্ছিলেন তিনি।
জানা যায়, সত্তোরোর্ধ বয়সের আমেনা বেওয়া। স্বামী সৈয়দ আলী বয়সের ভারে ন্যুব্জে পড়েছে। তাদের দাম্পত্য জীবনে একমাত্র সন্তান রাজ্জাক মিয়া। সেও মানসিক প্রতিবন্ধী। বসবাসের জন্য পলিথিন আর খড়ের বেড়া দিয়ে তুলেছে একটি ছাপড়া ঘর। জরাজীর্ণ এ ঘরে স্বামী-সন্তানের বসবাস। আকাশের মেঘ দেখলে আতঙ্ক বিরাজ করে তাদের মনে। একটু ঝড়-বৃষ্টি আসলেই দৌড় দিতে হয় অন্যের বাড়িতে। এছাড়া রান্না ঘর, টিউবয়েল-টয়লেটেও নেই তাদের। নেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও। যেনো অন্ধকার ভুতড়ে বসবাস। খোলা আকাশের নিচে রান্নাবান্না সারতে হয় আমেনাকে। প্রতিবন্ধী ছেলে রাজ্জাক মিয়া ভবঘুরে। স্বামী সৈয়দ আলীর শরীরেও নানা রোগে বাসা বেঁধেছে। একই অবস্থা আমেনা বেগমেরও। তবুও পেটের তাগিতে ছুটতে হয় মানুষের দুয়ারে। দিনশেষে যেটুকু রোজগার হয়, তা দিয়ে পেট পুড়ে খেতে হয়। মাসে একদিনও খেতে পারে না মাছ-মাংশ। স্বামী-স্ত্রী সারাদিন পরিশ্রম করে রাতে একটু ভালোভাবে ঘুমাতে পারে না। কারণ একটাই, ভাঙাচুরা ঘর। কখন দুর্যোগ উঠে এমন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে তাদের। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পলিথিন ঘরে বসবাস করে আসছে আমেনার পরিবারটি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এমন দুর্ভোগের শিকার এ পরিবারটি বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা থেকেও বঞ্চিত। প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধি দ্বারা আজও তাদের কপালে জুটেনি সরকারি সুযোগ-সুবিধা। সেই সঙ্গে করোনা ও বন্যা পরিস্থিতিতেও পায়নি কোনো ত্রাণ-সামগ্রী। সরকার প্রদত্ত সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছে আমেনা ও তার স্বামী-সন্তান।
বৃদ্ধা আমেনা বেগম বলেন, শীতকালে ভাঙা ঘরের চালা দিয়ে কুয়াশায় ভিজে যায় শরীর ও বিছানাপত্র। বর্ষাকালে আকাশের মেঘ দেখলে দৌঁড় দিতে হয় অন্যের বাড়িতে।
তিনি আরও বলেন, একটি ঘরের জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বরের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কিছুই পাওয়া যায়নি। এরপর শুনছিলাম ইউএনও স্যার আমাকে ঘর দিবে কিন্তু সেটিও পাইনি। প্রধানমন্ত্রী যদি একটা ঘর দিত মন ভরি দোয়া দিতাম।
ধাপেরহাট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, আমেনা বেগমের বিষয়টি আমার জানা নেই। দেখি কিছু করা যায় কিনা।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ নবীনেওয়াজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com