বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০০ পূর্বাহ্ন

ধাপেরহাটে তিন বন্ধুর আম্রকাননে বারমাস পাওয়া যায় আম

ধাপেরহাটে তিন বন্ধুর আম্রকাননে বারমাস পাওয়া যায় আম

ধাপেরহাট (সাদুল্লাপুর) প্রতিনিধিঃ সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ছোটছত্রগাছা গ্রামে শিক্ষিত বেকার তিন বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছে বার মাসি আম বাগান। এক বন্ধুর বাবার প্রায় চার বিঘা জমি গত ২০১৯সালে ১৫ বছরের জন্য লীজ নিয়ে থাইকাটিমন জাতের ৫’শ চারা লাগিয়েছেন তারা। গত আগষ্ট মাস থেকে বাগানের ফল বিক্রি শুরু হয়েছে। বাগানের কোন গাছে আম পেকেছে, কোন গাছে গোটা এসেছে, আবার কোনগাছে মুকুল ফুটেছে। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে তাদের বাগান থেকে ৩০/৩৫ কেজি আম ৫’শ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বার মাসি আমবাগান দেখতে প্রতিদিন উৎসুক জনতাসহ এলাকার বেকার শিক্ষিত যুবসমাজ ঐ বাগান পরিদর্শনে আসছেন। ঐ গ্রামের নায়েব আলীর পুত্র রুবেল,ফুল বাবুর পুত্র মাসুদ, হাসানের পুত্র জাহিদ তিন বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছেন এ আম্রকানন। তিন বন্ধুই পলিটেকনিক্যালের ছাত্র। লেখা পড়া শেষ করে তিন বন্ধু বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী দপ্তরে চাকুরীর জন্য চেষ্টা করেও চাকুরী না পেয়েও ভেঙ্গে পরেনি নিজেরাই স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য বিভিন্ন শলাপরামর্শ করে স্থানীয় কৃষিবিভাগের সাথে যোগাযোগ করে অবশেষে গড়ে তুলেছেন নিজ প্রচেস্টায় আ¤্রকানন। আমের পাশা পাশি তাদের বাগানে এখন বিক্রি হচ্ছে বাসমাসি আমের চারা। তাদের বাগানে রোপনকৃত গাছের বয়স এখন দুই বছর। দেড় বছর বয়স থেকেই তাদের গাছে ফল আসা শুরু করেছে। গত ৫ মাসে ডিসেম্বর/২০পর্যন্ত প্রায় ১৫মন আম বাজারে বিক্রি করেছেন তারা। তাদের নতুন চারা রোপন ও মাত্রিগাছ রক্ষনাবেক্ষনসহ আনুমানিক খরচ হয়েছে দু’লাখ টাকা। গত ৫ মাসে আম বিক্রি করে তাদের খরচের টাকা তুলে লাভের মুখ দেখছেন এখন। এ লাভ জনক বার মাসি আমের বাগান দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবকেরা এই বারমাসি আম চাষে ঝুকে পড়েছেন। সংগ্রহ করছেন তাদের কাছ থেকে বাস মাসি আমের চারা। প্রতিটি চারার মুল্যে ২০০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সুন্দর একটি প্রসংশনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন তিন বন্ধু। তিন বন্ধুর অতিত খুজতে গিয়ে তাদেরি এক বন্ধু রুবেল জানান, আমরা এই বাগান করতে গিয়ে হাতে পুজি ছিলনা, রক্ষনাবেক্ষনের জন্য একজন শ্রমিক দরকার এই চিন্তায় ভেঙ্গে পরতেছিলাম প্রায়। এরই মধ্যে এক বন্ধুর পরামর্শে আমরা তিনজন মিলে টাকা রোজগারের জন্য ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরী করি। সেখান থেকে পুজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করি এবং আমাদের নিয়োগ দেয়া রক্ষনা বেক্ষনের জন্য শ্রমিকের বেতন প্রদান করি। মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রবল সংকটে যখন দেশ বন্ধ হয়ে গেল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী, তখন তিন বন্ধু চাকুরী হারিয়ে বাড়ীতে এসে পুরোদমে নিজ হাতে গরা আমের বাগানের পরিচর্চায় লেগে পরি। আল্লাহর রহমতে এখন আমরা সুখের মুখ দিখছি। তবে স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে এখনো আমাদেরকে কোন সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি। আমাদের দেখা দেখি এলাকার অনেক বেকার যুবক স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় বার মাসি আম চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। এব্যাপারে স্থানীয় কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতা আলমগীর হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন তিন বন্ধুর আ¤্রকাননের বাগান ইতিমধ্যেই এলাকায় বেশ সাড়া জাগিয়েছে। এটা একটি প্রসংশনীয় উদ্যোগ আমাদের কৃষি বিভাগের লোকজন আমের বাগান পরিদর্শন করেছে এবং বিভিন্ন পরামর্শ অব্যহত আছে। এ এলাকার মাটি থাই কাটিমন আমের জন্য উপযোগি, আমরা তাদেরকে প্রয়োজনী কীটনাশক ও সার সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছি।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com