শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৩ অপরাহ্ন

দীর্ঘ দুই দশক বন্ধ থাকা রামচন্দ্রপুর পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চীনের আর্থিক সহযোগিতায় ১০০০ শয্যা হাসপাতাল নির্মাণের দাবি

দীর্ঘ দুই দশক বন্ধ থাকা রামচন্দ্রপুর পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চীনের আর্থিক সহযোগিতায় ১০০০ শয্যা হাসপাতাল নির্মাণের দাবি

তাসলিমুল হাসান সিয়াম: দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা ৬৩ বছরের পুরনো রামচন্দ্রপুর পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির জায়গায় চীনের আর্থিক সহযোগিতায় ১০০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন গাইবান্ধার জনসাধারণ।
সম্প্রতি জেলাবাসীর পক্ষে হাসপাতালটিকে পুনরায় চালু ও ১০০০ শয্যায় উন্নীত করতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকার একটি প্রকল্পের আওতায় তৎকালীন গাইবান্ধা মহকুমার বর্তমানে সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের আরিফখা ও পার্বতীপুর মৌজায় ১০ একর জমিতে ১০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেন। জেলা শহর থেকে ৬.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই হাসপাতালটিতে একসময় প্রায় প্রতিদিনই শতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসলেও বর্তমানে তা বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে হাসপাতাল এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ডরমেটরি, অপারেশন থিয়েটার, মেডিকেল অফিসারের কক্ষসহ ৮ টি ভবন জীর্ণ দশায় পড়ে আছে। এরমধ্যে তিন তলা ও দুই তলা বিশিষ্ট ভবন দুইটি পুরোপুরি মাদকসেবীদের দখলে ।
এদিকে হাসপাতালটির অভ্যন্তরীণ সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও এখানে প্রতি বছর প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এখনও ১০ জন স্টাফ এখানে বহাল রয়েছে। তাদের মধ্যে ডেপুটেশনে একজন চিকিৎসক, চারজন নার্স, একজন ফার্মাসিস্ট ও দুইজন সুইপার রয়েছে। হাসপাতালের কার্যক্রম না থাকা সত্ত্বেও এসব স্টাফ কেন এখানে নিয়োজিত রয়েছে এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ এখানে কর্মরত কেউই সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করেন না। জবাবদিহিতা না থাকায় অনেক সময় দুপুর একটার পর ডাক্তার, ফার্মাসিস্ট ও নার্সরা হাসপাতাল ত্যাগ করেন এতে চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হয় রোগীদের।
অচল রামচন্দ্রপুর পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র সচল কর বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক পাপুল রানা বলেন ৩১ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালটি গাইবান্ধার প্রথম আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল ছিলো। এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা নিতে আসত কিন্তু রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে । আমরা চাই চীনের আর্থিক সহযোগিতায় রংপুরের পরিবর্তে রামচন্দ্রপুরের পরিত্যক্ত ৩১ বিঘা জমিতে ১০০০ শয্যা হাসপাতাল তৈরি করার জন্য আহবান জানাচ্ছি। এই হাসপাতালটি পুণ:নির্মিত হলে গাইবান্ধা জেলার ২৫ লক্ষাধিক মানুষ উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবে ।
হাসপাতালটিতে কর্মরত ফার্মাসিস্ট মাহাবুবুর রহমান (লিটন) বলেন, ২০০৭ সালে হাসপাতালটির অভ্যন্তরীণ শয্যায় চিকিৎসা সেবা প্রদান বন্ধ করে দেওয়া হয় এরপর থেকে আর চালু করা সম্ভব হয়নি হাসপাতালটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভঙ্গুর উল্লেখ করে তিনি বলেন আমাদের এখানে কোন নিরাপত্তা প্রহরী না থাকায় হাসপাতালের মূল্যবান আসবাবপত্রসহ প্রায় অনেক কিছুই চুরি হয়ে যাচ্ছে । এসময় তিনি আরও উল্লেখ করেন এটি একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এর দেখভাল ও নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com