মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন

দশ দিনেও দুই বোন হত্যার ক্লু পায়নি পুলিশঃ মা-বাবা রিমান্ডে

দশ দিনেও দুই বোন হত্যার ক্লু পায়নি পুলিশঃ মা-বাবা রিমান্ডে

সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হত্যার দশদিন পেরিয়ে গেলেও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কানিচরিতাবাড়ি গ্রামের সহোদর দুই বোন হাসি বেগম (১৪) ও খুশি বেগম (১২) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। হত্যাকান্ড নিয়ে পরস্পর বিরোধী কথাবার্তা বলায় গ্রেপ্তারকৃত জেল হাজতে থাকা মা ও বাবাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গত সোমবার আদালতে রিমান্ড আবেদন শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে পুলিশ রাতে মা ও বাবাকে থানা হাজতে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।
মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা ধুবনী কঞ্চিবাড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মানষ রঞ্জন দাস জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। আসামি গ্রেপ্তারসহ মামলার স্বার্থে এই মহুর্তে তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে অতিদ্রুত হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং আসামি গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা হবে। হত্যার স্থানটি উপজেলা শহর হতে ৩০ কিলোমিটার দুরে দূর্গম চরাঞ্চলে হওয়ায় তদন্ত কাজ বিলম্ব হচ্ছে।
গত ১মে রোববার বিকালে হরিপুর ইউনিয়নের দূর্গম চরাঞ্চল পাড়াসাদুয়া গ্রামের তিস্তা নদীর কোলা (গভীর স্থান) হতে হাসি আক্তার ও খুশি আক্তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হাসি ও খুশির মা আদুরী বেগম ও বাবা হামিদুল ইসলাম হত্যাকান্ডের বিষয় নিয়ে পরস্পর বিরোধী কথা বার্তা বলায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে উভয়কে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, গত এক বছর পূর্বে পরকীয়ার কারণে হাসি ও খুশির বাবা হামিদুল ইসলাম তাদের মা আদুরী বেগমকে আদালতের মাধ্যমে তালাক দেয়। আদালত এবং স্থানীয় সালীশ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক হাসি বেগম তার বাবার সাথে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কানিচরিতাবাড়ি গ্রামে এবং খুশি বেগম তার মা’র সাথে নানার বাড়ি পাশ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার খামার বজরা মধ্যপাড়া গ্রামে থাকত। এক মাসের ব্যবধানে হাসি আক্তার তার নানার বাড়িতে চলে যায়। মাঝে মধ্যে মোবাইল ফোনে বাবার সাথে কথাবার্তা বলত দুই বোন।
মামলার বাদী ও হাসি এবং খুশির নানী খতেজা বেগম জানান, হত্যাকান্ডের এক সপ্তাহ পূর্বে হাসির বাবা হামিদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে তাকে স্থানীয় কাশিমবাজারে ডেকে নিয়ে কসমেটিক কেনার জন্য ৫০০ টাকা দেয়। এরপর ঈদের একদিন আগে গত ৩০ এপ্রিল বিকালে ঈদের কেনাকাটা করে দেয়ার জন্য হাসি ও খুশিকে তার বাবা মোবাইল ফোনে কাশিমবাজারে ডাকে। সে মোতাবেক হাসি ও খুশি বাজারে চলে আসে। সন্ধ্যার পরও মেয়েরা বাড়িতে ফিরে না এলে হাসি ও খুশির মা আদুরী বেগম মোবাইল ফোনে মেয়েদের অবস্থান জানতে চায়। বাবা জানায় তারা চলে গেছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও রাতে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। পরদিন ১ মে রোববার সকালে স্থানীয়রা নদীর কোলার মধ্যে সহোদর দুই বোনের লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করতে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে হাসি ও খুশির নানী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ সনাক্ত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশের সুরুতহাল রিপোট করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মা,বাবা, মামা ও নানীকে থানায় নিয়ে আসে। হত্যাকান্ডের বিষয় নিয়ে পরস্পর বিরোধী কথাবার্তা বলায় মা ও বাবাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত ২ মে সোমবার জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।
ওসি সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম জানান, দুই বোনর মা ও বাবাকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আশা করা যাচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে। পুলিশ অধিকতর গুরুত্বের সহিত হত্যাকান্ড বিষয়টি তদন্ত করছে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com