শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২১ পূর্বাহ্ন

জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিতঃ পর্যাপ্ত ত্রাণ না থাকায় পানিবন্দী কর্মহীন মানুষদের দুর্ভোগ

জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিতঃ পর্যাপ্ত ত্রাণ না থাকায় পানিবন্দী কর্মহীন মানুষদের দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টারঃ ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি এখন বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গত শনিবার রাতে বাঙালী নদীর বোচাদহ গ্রামে বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ, রাখালবুরুজ ও কোচাশহর ইউনিয়নের বোচাদহ, বালুয়া, ছয়ঘরিয়া, শ্রীপতিপুর, কুমিড়াডাঙা, পুনতাইর, পাছপাড়া, গোপালপুর, জিরাই, সোনাইডাঙ্গা, হরিনাথপুর-বিশপুকুর, কাজিরচক, পচারিয়া, মাদারদহ, কাজিপাড়া, ফরিকরপাড়া, পানিয়াসহ ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা রয়েছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসিনতায় দেরীতে কাজ শুরু করায় এ বাঁধটি ভেঙে গেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
অপরদিকে গাইবান্ধা জেলা শহর সংলগ্ন কুপতলা, খোলাহাটি, ঘাগোয়া, গিদারী ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকায় বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ফলে ওইসব ইউনিয়নগুলোর বসতবাড়ি এবং সড়কগুলোতে এখন হাটু পানিতে নিমজ্জিত। এছাড়া গাইবান্ধা পৌরসভার অনেক নিচু এলাকাগুলোতেও পানি উঠে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, উল্লে¬খিত উপজেলাগুলোতে ৩ হাজার ২৪৬ হেক্টর জমির আমন রোপা, পাট, আউশ ধান ও শাক সবজি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে উপদ্রুত এলাকার মানুষ চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। সরকারি ত্রাণ তৎপরতার তুলনায় একেবারে কম হওয়ায় সংশি¬ষ্ট পরিবারগুলো নিদারণ কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি, গোবিন্দগঞ্জ, সাদুল্যাপুর ও সদরসহ ৬ উপজেলায় ৩৮টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। মোট ১ লাখ ৪৮ হাজার ১৩৮ ব্যক্তি এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৫৫০ মে. টন চাল এবং ৫ হাজার ৬৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্রের পানি একই নেভেলে থেকে বিপদসীমার ৯১ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি এসময় ২ সে.মি. কমে বিপদসীমার ৭২ সে.মি. এবং করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ১৬ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ অবিরাম বর্ষন এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দ্বিতীয় দফার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কিন্তু নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। টানা অবিরাম বর্ষন এবং উজানের ঢলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, কঞ্চিবাড়ি, শান্তিরাম, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্বিতীয় দফা বন্যা দেখা দেয়। পানি কমতে শুরু করলেও গত রোববার দিবাগত রাত হতে বাড়তে শুরু করেছে। উপজেলার বিভিন্ন চরে বন্যার তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় দফা বন্যায় উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন চরের কমপক্ষে ১২ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্ধি। শ্রীপুর চরের ফরমান আলী জানান, তার ঘরের ভিতরে এখনও পানি রয়েছে। স্ত্রীপুত্র পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছি । হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি জানান চরাঞ্চলের পরিবারগুলো বিশেষ করে গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছে। উপজেলা নিবার্হী অফিসার কাজী লুতফুল হাসান জানান, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ইতি মধ্যে বানভাসি গৃহপালিত পশুপাখির জন্য খড়ের আটি বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com