শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

জেনারেল হাসপাতাল ঔষধ ক্রয়ে দরপত্র ঘাপলার পায়তারা

জেনারেল হাসপাতাল ঔষধ ক্রয়ে দরপত্র ঘাপলার পায়তারা

স্টাফ রিপোর্টারঃ অযাচিত শর্ত আরোপ করে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের এম এস আর দরপত্র আহবানকারী কম দরদাতাদের বাতিল করে উচ্চ দরদাতাদের উত্তীর্ণ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এর প্রতিকার চেয়ে গত সোমবার গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ঔষধসহ বিভিন্ন দ্রব্যাদি ক্রয়ে এম এস আর (ঔষধপত্র, লিলেন, যন্ত্রপাতি, গজ-ব্যান্ডেজ-তুলা, রাসায়নিক রিয়াজেন্ট ও আসবাবপত্র) দরপত্র প্রকাশ করা হয় চলতি বছরের ২০ এপ্রিল। আর দরপত্র জমাদানের শেষ তারিখ ছিল ১৩ মে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ২৮টি দরপত্র জমা পড়ে। এই দরপত্রে ৪০টি অযাচিত শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। টেন্ডার আইন বহির্ভুত কিছু মনগড়া শর্ত আরোপ করে সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাতিল করার পায়তারা চালানো হচ্ছে। এভাবে সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাতিল করলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হবে। সাধারণ দরপত্র মুল্যায়ন কমিটিতে জেলা প্রশাসকের একজন প্রতিনিধি থাকার কথা থাকলেও এখানে তা অনুপস্থিত রয়েছে।
দরপত্রের নীতিমালা অনুযায়ী, সর্বনিম্ন কম দরদাতাকে কার্যাদেশ দেওয়ার কথা। কিন্তু সর্বনিম্ন দরদাতাকে না দিয়ে তুলনামূলক উচ্চ দরদাতাকে বাছাইয়ে উত্তীর্ণ করার পায়তারা চালানো হচ্ছে।
আবেদনকারীদের পক্ষে গাইবান্ধা শহরের স্টেশন রোডস্থ সিয়াম স্টোরের প্রতিনিধি সিহাব মিয়া বলেন, দরপত্র নীতিমালা অনুযায়ী, ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট, আইটি, ব্যাংক সার্টিফেকেট এবং অভিজ্ঞতা থাকলে দরপত্রে অংশগ্রহন করতে ও কাজ করতে কোন বাঁধা নেই। অথচ গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের এই টেন্ডারে ৪০টি অপ্রয়োজনীয় শর্ত জুড়ে দেন। তাছাড়া ট্রেড লাইসেন্সের ক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রুপের আলাদা আলাদা ট্রেড লাইসেন্স চায়। কিন্তু ট্রেড লাইসেন্স আইন অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ও সরবরাহকারীর ট্রেড লাইসেন্স থাকলেই অন্য কোন ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার দরকার হয়না। টেন্ডার আবেদনের প্রতি পাতায় স্বাক্ষর দিতে হয় ও ঠিকাদার কর্তৃক দেওয়া কাগজপত্র গেজেটেড অফিসার দ্বারা সত্যায়িত করে দিলে টেন্ডার গ্রহন করতে হয়। কিন্তু আমরা উক্ত অফিস প্রধানের সাথে যোগাযোগ করলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম নতুন নতুন শর্তের কথা বলেন। বাংলাদেশের অন্যান্য মেডিকেল ও সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে দরপত্র দাখিল করতে এতো শর্তের বেড়াজালে পড়তে হয়না আমাদের। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে প্রতিবার টেন্ডারে আমাদের অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
আবেদনকারীদের মধ্যে আরেক ঠিকাদার এইচটি ড্রাগ হাউজের মালিক এমদাদুল হক বলেন, বিশেষ একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য হাসপতাালের তত্ত্বাবধায়ক এসব পায়তারা চালাচ্ছেন। একই ধরনের দরপত্রে ক্ষেত্রে অন্যান্য জেলাগুলোতেও একই ধরনের দরপত্র আহবান করা হয়। কিন্তু সে জেলাগুলোতে এতো শর্ত দেওয়া হয়না।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ মাহফুজার রহমান বলেন, দরপত্র আহবানে কোন অনিয়ম হয়নি। বিশেষ কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। এখনো জমা পড়া দরপত্র যাচাই-বাছাই চলছে। শর্ত আরোপের বিষয়ে তিনি বলেন, এসব শর্ত দিয়ে আগে থেকেই গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের দরপত্র আহবান করা হচ্ছে। আমিও তাই করেছি। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে যার কাগজপত্র সঠিক হবে ও নিম্ন দরদাতা হবে তিনিই কাজ পাবেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুল মতিন বলেন, হাসপাতালের ঔষধ ক্রয়ে দরপত্রে অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com