বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৪১ অপরাহ্ন

চতরাহাটে ২ দিনের ব্যাবধানে মায়ের মস্তক বিহীন মরদেহ ৪ বছরের শিশু লাশ উদ্ধার

চতরাহাটে ২ দিনের ব্যাবধানে মায়ের মস্তক বিহীন মরদেহ ৪ বছরের শিশু লাশ উদ্ধার

ধাপেরহাট (সাদুল্লাপুর) প্রতিনিধি-ঃ পীরগঞ্জে দুই দিনের ব্যাবধানে গত শুক্রবার পাওয়া যায় মায়ের মাথা বিহীন লাশ। পরেরদিন গত শনিবার খন্ডিত মায়ের মাথা, আর গতকাল রবিবার সকালে উদ্ধার হয় সেই নারীর ৫ বছরের কন্যা শিশুর মরদেহ।
নীলফামারী জলঢাকার গোলমুন্ডা এলাকার রবিউল ইসলামের কন্যা দেলোয়ারা বেগম ওরফে ঝিনুক স্বামীর দ্বারা নির্যাতিত হয়ে তার শিশু কন্যা সায়মাকে নিয়ে যাত্রার নর্তকী হিসাবে নাচ করতে এসে পরিচয় হয়, পীরগঞ্জের চতরাহাট এলাকার কুখ্যাত জুয়ারী আতিকুরের সাথে-। বিয়ের স্বামীকে ছেড়ে ৪ বছরের কন্যা সন্তানকে নিয়ে পরকিয়া করে স্বপ্নের ঘর বাঁধেন দেলোয়ারা বেগম ঝিনুক (৩৩) । হতভাগা নারী ঝিনুকের কপালে সেই স্বপ্নের ঘর সংসার আর সইলো না।
পীরগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের বদনাপাড়া গ্রামে সীম ক্ষেতের পাশে মস্তকবিহীন এক যুবতী নারীর লাশ এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে ঐ নারীর মাথা বিহীন লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
এই ঘটনায় সন্দেহভাজন ঝিনুকের পরকিয়া স্বামী বদনা পাড়া গ্রামের মোঃ তারা সরকারের পুত্র আতিকুর রহমান (৩৫) কে পুলিশ গ্রেফতার পূর্বক ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আতিকুর তার কথিত স্ত্রী ঝিনুককে গর্দান থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে লাশটি পাশের সীম ক্ষেতে ফেলে রাখার কথা স্বীকার করে এবং তার মাথাটি টোংরাদহ গ্রামের করতোয়া নদীর তীরে মাটির নিচে পুঁতে রাখে রাখার কথা জানায়।
ঘাতক আতিকুর পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে এবং গত শনিবার দুপুরে উক্ত স্থান থেকে ঝিনুকের মাথাটি উদ্ধার করে পুলিশ।
বিষয়টি গনমাধ্যমে ব্যাপক জানাজানি হলে ঝিনুকের প্রথম স্বামী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দিলালপুর গ্রামের মৃত্যু মহির উদ্দিনের পুত্র মোঃ রেজাউল করিম পীরগঞ্জ থানায় হাজির হয়ে পুলিশকে জানায়, আমার স্ত্রী ঝিনুক আমার ৪ বছরের সাইমা নামের এক মেয়েকে নিয়ে আতিকুরের বাড়িতে চলে এসেছে। আমি অনেক চেষ্টা করেও আমার মেয়েকে ফেরত দেয়নি আতিকুর।
এই কথার প্রেক্ষিতে পুলিশ আতিকুরকে দফায় দফায় জিঞ্জাসাবাদ করে।
শেষ পর্যন্ত আতিকুর পুলিশকে জানায়, এখন থেকে দুই মাস পূর্বে আমি ঐ সাইমাকে হত্যা করে আমার বাড়ির পিছনে গবরের পালায় গর্ত খুঁড়ে পুঁতে রেখেছি আতিকুরের কথার সূত্র ধরে পুলিশ গতকাল রবিবার সকালে সেই স্থানে যায় এবং নিদিষ্ট স্থান তার বাড়ির পিছনে মাটির নিচ থেকে শিশু সাইমার অধগলিত লাশ উদ্ধার করে।
শিশু সাইমাকে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখা এবং ঝিনুককে গর্দান থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গতকাল রবিবার সকালে আতিকুরের বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এ সকল ঘটনার সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং করেন রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম এসময় সাথে ছিলেন এ,এস,পি আসিফা আফরোজ আদুরী এবং পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এম,এ ফারুক। এ ঘটনায় পুলিশবাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে ওসি ফারুক জানান গত বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে গ্রেফতারকৃত আসামী আতিকুর একটি ধারালো ছোরা দিয়ে ঝিনুককে জবাই করে ফেলে রেখে মাথাটি ১ কিঃমি দুরে নদীর ধারে পুতে রাখে পরদিন খন্ডিত মাথাটি উদ্ধার করা হয়েছে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঝিনুকের কন্যা শিশুর মরদেহ গতকাল রবিবার সকালে উদ্ধার করা হয়েছে। এমন পাষন্ড আতিকুরের দৃষ্টান্ত মুলক বিচার হোক এটাই এলাকাবাসীর কামনা।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com