বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ মুনাফার আশায় তিন শতাধিক গ্রাহক আমানত হিসেবে ব্যাংকে জমা রেখেছিলেন প্রায় তিন কোটি টাকা। শুরুতে মুনাফা পেলেও হঠাৎ করে গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ব্যাংক কর্মকর্তারা। একপর্যায়ে ব্যাংকের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে উধাও হয়েছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গায় আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স (এসিসিএফ) ব্যাংক এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী তিন শতাধিক গ্রাহক।
জেলা সমবায় কার্যালয় সূত্র জানায়, আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক লিমিটেড সমবায় প্রতিষ্ঠান হলেও তারা ব্যাংকের মতো কার্যক্রম চালাচ্ছে। এ কার্যক্রম বন্ধে সমবায় অফিস কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
আমানতকারীদের অভিযোগ, বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে আমানতকারীদের কাছ থেকে নলডাঙ্গা শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুল বারি, একাউন্টেন্ট তাজুল ইসলাম ও সিনিয়র অফিসার বেলামিন হোসেন মিলে আমানত সংগ্রহ করেন। শুরুর দিকে মুনাফা দিলেও প্রায় মাস ছয়েক আগে থেকে তা বন্ধ করে দেন। মূলধনও ফেরত দিচ্ছেন না। সেসময় গ্রাহকদের দিনের পর দিন ঘোরানো হতো। এর পর গত তিনমাস ধরে শাখাটি তালা বদ্ধ। ব্যবস্থাপকসহ ওই শাখা সহযোগীরা এলাকা ছাড়া। উধাও হওয়ার পর কিছুদিন ফোনে কথা হলেও এখন আর ফোনই ধরছেন না। উল্টো আমনতকারীদেরকে নানা রকম হুমকি-হয়রানি করা হচ্ছে। ছয়মাস ধরে এ অবস্থা চলছে।
সরেজমিনে সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গার ১নং রেলগেট এলাকায় সৌদিয়া মার্কেটের ২য় তলায় আজিজ কো-অপারেটিভকমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক লিমিটেডের ওই শাখায় গিয়ে দেখা যায় মূল ফটকে তালা ঝুলছে। কলাপ্সিবল তালাবদ্ধ গেটের ভেতর দিয়ে দেখা যাচ্ছে টেবিল চেয়ার ও কাচে ঘেরা ব্যবস্থাপকের কক্ষ। নেই ভেতরে-বাহিরে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী।
প্রতিষ্ঠানটি থেকে আমানত ফেরত নেওয়ার জন্য শাখা কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষমাণ সর্বানন্দ গ্রামের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী অমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বছর পাঁচেক আগে ৫ লাখ টাকা আমানত রেখেছিলাম। পরে কিছু কিছু করে কিস্তি ভিত্তিক টাকা তোলার পরে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা তারা আটকে দেয়। এই টাকা চাইলে তারা দেয় দিচ্ছি বলে তালবাহানা করে। একপর্যায়ে ব্যাংক বন্ধ করে উধাও হয়ে যায়।
ভবনের মালিক মোত্তালেব হোসেন বলেন, ২০১৬ সালে মাসিক ৭ হাজার টাকায় ভবনের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছি। ভাড়া ১০ মাসের বাকি আছে। বকেয়া টাকা ও ফ্ল্যাট বুঝে না দিয়ে তালাবদ্ধ করে তারা উধাও হয়েছে। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক আব্দুল বারি ২০১৬ সাল থেকে ওই শাখায় কর্মরত আছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে তাঁর দশলিয়া গ্রামের বাসভবনে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।