বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৪ অপরাহ্ন
গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধিঃ গোবিন্দগঞ্জে সামাজিক বনায়নের অর্ধ কোটি টাকা মুল্যের ১ হাজার গাছ নামমাত্র মূল্যে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ফরেস্টার মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনা প্রকাশ হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সুবিধাভোগীরা পুনঃ দরপত্রের মাধ্যমে প্রকৃত মূল্য নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের পাশ থেকে বাজুনিয়াপাড়া চৌমাথা বটতলা গামার গেট পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে ১৫ বছর আগে ১হাজার ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানো হয়। কান্টু ওয়ান নামে একটি সমিতির সদস্যদের গাছগুলো দেখ-ভালের দায়িত্ব দেয়া হয়। রংপুর বন বিভাগের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী কান্টু ওয়ান সমিতির বিল্লুসহ ৩০ সদস্যের তত্ত্বাবধানে সামাজিক বনায়নের গাছগুলো বেড়ে উঠতে থাকে। সড়কের শোভাবর্ধনকারী গাছগুলো ১৫ বছর পর পরিপক্ক হয়ে উঠেছে। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ফরেস্টার মিজানুর রহমান সুকৌশলে গাছগুলো নাম্বারিং করে গত মার্চ মাসে টেন্ডার দেন। করোনা দুর্যোগের মাঝে টেন্ডার প্রকাশ না করে কয়েক মাস পর সুবিধাভোগীদের না জানিয়ে তিনি মোকামতলা, গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ীর ৪ জন কাঠ ব্যবসায়ীর কাছে নামমাত্র মূল্যে গাছগুলো বিক্রি করে দেন। এরপর থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী দালাল আব্দুল মান্নান, শাহারুল মেম্বার, রশিদ মেম্বার ও মিলুসহ কয়েকজন হঠাৎ করেই রাস্তার ওইসব গাছ কাটতে শুরু করে। এতে সুবিধাভোগীরা বাঁধা দিলে তারা জানতে পারেন, প্রথম তিন লটের জন্য জমা হয়েছে মাত্র দুই লাখ ৪১ হাজার ৮শ’ টাকা- আর বাকি তিন লটের গাছের সংখ্যা ১৮০টি। নামমাত্র মূল্যে গাছ বিক্রি করায় সুবিধাভোগীরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবগত করেন। এরই ফাঁকে দালালরা তড়িঘড়ি করে গাছগুলো দিনরাত শ্রমিক দিয়ে কাটার চেষ্টা করছে। স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী ও সুবিধাভোগীরা জানান, অধিকাংশ গাছের বাজারমূল্য ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা হবে। তাদের ধারণা, এই তিন লটের ১৮০টি গাছের আনুমানিক মূল্য হবে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। আর ১৫টি লট বিক্রি হবে অর্ধকোটি টাকা- সেখানে ফরেস্টার মিজানুর রহমানের যোগসাজশে গাছগুলি মাত্র ১৭ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
হরিরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী সাজু জানান, ইউনিয়ন পরিষদকে না জানিয়ে উপজেলা ফরেস্টার মিজানুর রহমান নামমাত্র মূল্যে গাছগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। বিষয়টি জানার পর পুনঃ দরপত্রের মাধ্যমে গাছগুলো বিক্রির জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ও সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কমমূল্যে গাছ বিক্রির বিষয়ে আমি একটি আবেদন পেয়েছি- এই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।