শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন

গোবিন্দগঞ্জে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক বসত বাড়ী,রাস্তা ঘাট হুমকির মুখে

গোবিন্দগঞ্জে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক বসত বাড়ী,রাস্তা ঘাট হুমকির মুখে

গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধিঃ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ৪টি স্পটে সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ ভাবে উত্তোলন করে বিক্রি করছে এলাকার একটি প্রভাবসালী চক্র। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে নদী ও জুটমিলের জমি দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধ ভাবে স্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলণ করছে। নির্বিচারে এসব বালু উত্তোলন করায় ভেঙ্গে যাচ্ছে মানুষের চলাচলের রাস্তা ও গ্রামের অহায় আশ্রয়হীন মানুষের এক মাত্র আশ্রয়স্থল বালুয়া বাজার সংলগ্ন সরকারী জুটমিলের জমিতে গড়ে উঠা গুচ্ছ গ্রামটি এখন ধ্বংশের দ্বার প্রান্তে। বালুদস্যূ সাপগাছি হাতিয়াদহ গ্রামের মনতাজ আলী ও তার পুত্র রমজান আলীগংরা দীর্ঘ কয়েক বৎসর যাবৎ সরকারী জুটমিলের জায়গা দখল করে শ্যালো মেশিন দ্বারা দিন রাত বালু উত্তোলণ করছে। এতে দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালণ লাইন ৩৩ কেভি’র দু’টি পোল যে কোন মুহুতে ভেঙ্গে পড়ে সারা দেশের সাথে বিদ্যুৎ সঞ্চালণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তালুককানুপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর ও সমসপাড়া এলাকায় করতোয়া নদী দখল করে বালুদস্যূ সমস পাড়া গ্রামের আমির উদ্দিনের পুত্র বাবু মিয়া (৫০), আবির উল্ল্যার পুত্র বাদশা মিয়া (৫২), মছির মন্ডলের পুত্র আলম মিয়া (৪৫), ফজেল হকের পুত্র মোজাম (৪৮), হাফিজার মেম্বর (৫৫), চন্ডিপুর গ্রামের আজির উদ্দিনের পুত্র আঃ মজিদ (৪৯), আঃ বাকী প্রধানের পুত্র রেজাউল বারী (৪২), আবুল হোসেনের পুত্র আনিছুর রহমান (৪০), লাল মামুদের পুত্র আবু তালেব (৪৮), মৃত-সৈয়জ্জামান মোল্লার পুত্র চিনু মোল্লা (৩৫) সহ আরো অনেকে সরকারী নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে অবাধে বালু উত্তোলন করে কোটিপতি বনে গেছে। এ দিকে এসব বালু নদী থেকে উত্তোলণ করায় করতোয়া নদীর গা ঘেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দু’টি আশ্রয়ন প্রকল্প এখন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার উপক্রম। ইতিমধ্যে বসবাসরত ভূমিহীনদের যাতায়াতের রাস্তাটুকু বালুদস্যূদের কারণে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে সরকারের কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণধীন আশ্রয়ন দু’টি প্রকল্প এখন হুমকির মুখে। সাপমারা ইউনিয়নের গোবিন্দগঞ্জ টু দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ দিয়ে করতোয়া নদীর তরফমনু, কাইয়াগঞ্জ ও চকরহিমাপুর গ্রামেও চলছে বালুদস্যূদের বালু উত্তোলণের মহাউৎসব। বালুদস্যূদের কবল থেকে সরকারী সম্পদ যাতায়াতের রাস্তা, অসহায় মানুষের বাসস্থান গুচ্ছগ্রাম এবং আশ্রয়ণ প্রকল্প রক্ষায় স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তালুককানুপুর ও সাপমারা ইউনিয়ন (ভূমি) সহকারী কর্মকর্তা তদন্ত করে বালুদস্যূদের বিরদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে পৃর্থক ভাবে দু’টি এজাহার গত ১৭ জুলাই ২০১৯ ইং তারিখে থানায় দাখিল করলেও দীর্ঘ দিনেও আলোর মুখ দেখেনি। বালু উত্তোলণের ফলে সাপগাছি হাতিয়াদহ গ্রামের ভুক্তভোগীরা বলেন, জুটমিলের পরিত্যক্ত জায়গায় দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা বাস্তহারা মানুষ বাড়ীঘর করে আছি। ৫-৭ বছর যাবৎ স্থানীয় বালুদস্যূরা জুটমিলের জায়গা দখল করে শ্যালো মেশিন দ্বারা বালু উত্তোলণ করায় আমাদের বাড়ীঘর ও চলাচলের সরকারী রাস্তাা ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং বাড়ীঘর দেবে যাওয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসনের লোক আসে আর যায় কিন্তু বালু উত্তোলণ বন্ধ হয় না। চন্ডিপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারীরা বলেন, করতোয়া নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু তোলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারীদের চলাচলের রাস্তা বিলীন হয়ে এখন আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ীঘর হুমকির সম্মুখীন এ বিষয়ে তালুককানুপুর ইউনিয়ন (ভূমি) ও উপ-সহকারী কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, অবৈধ ভাবে ভূমি থেকে স্যালো মেশিন দিয়ে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলণ করায় ওইসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্ত করে ১৬ জনকে আসামী করে গত ১৭ জুলাই গোবিন্দগঞ্জ থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে। অনুরুপ ভাবে সাপমারা ইউনিয়ন (ভূমি) উপ-সহকারী কর্মকর্তাও বালুদস্যূদের আসামী করে পৃর্থক একটি এজাহার থানায় দাখিল করেছে। সাপমারা ইউনিয়ন (ভূমি)সহকারী তিনিও বালু দস্যূদের বিরুদ্ধে একটি পৃথক এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহার দায়েরের বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এ,কে,এম মেহেদী হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এসব বিষয়ে মোবাইল কোর্ট আছে, যদি তারা আমার কাছে পুলিশ ফোর্স চায়, সে ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারি। মামলা নিতে পারি না।গোবিন্দগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজির হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ভ্রাম্যমান মোবাইল কোর্ট চলামান আছে। আর যেহেতু মোবাইল কোর্ট ওইসব এলাকায় গেলে বালু দস্যূরা পালিয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষা ও জনদুর্ভোগ লাঘবে দু’টি ইউনিয়নের(ভূমি) উপ-সহকারী বাদী করে বালু উত্তোলণকারীদের আসামী করে নিয়মিত মামলা দায়ের করার জন্য থানায় এজাহার দিয়েছেন।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com