বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৭ অপরাহ্ন

গোবিন্দগঞ্জের নদী খাল-বিল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক ॥ বিপন্ন সড়ক বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বসতবাড়ি

গোবিন্দগঞ্জের নদী খাল-বিল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক ॥ বিপন্ন সড়ক বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বসতবাড়ি

স্টাফ রিপোর্টারঃ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নদী-নালা, খাল-বিল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক পড়েছে। এতে সংশি¬ষ্ট সড়ক, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ও বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে ভূমি ধ্বসের সৃষ্টি হচ্ছে। এব্যাপারে উপজেলার সচেতন মহলের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়ে এবং মানববন্ধন কর্মসূচী পালনসহ স্মারকলিপি প্রদান করেও এই বালু উত্তোলন প্রবণতা বন্ধ হয়নি। মাঝে মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেয়া হলেও এর প্রতি কোনই তোয়াক্কা করছে না বালু উত্তোলনকারি সংঘবদ্ধ চক্রটি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করে অবৈধ বালুদস্যুরা এদিকে যেমন বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হচ্ছে অন্যদিকে তেমনি পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে এবং নদী ও খাল-বিল পুকুরের ভাপকহারে ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তদুপরি অধিকাংশ এলাকায় নির্বিচারে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের ফলে বহু আবাদি জমি ধ্বসে গিয়ে দ্রুত ভূমি শ্রেণির পরিবর্তন ঘটছে।
উল্লে¬খ্য, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের ১০৭টি পয়েন্টে অবৈধভাবে শ্যালো মেশিনের সাহায্যে দেশের প্রচলিত আইন ও প্রশাসনের তোয়াক্কা না করেই প্রভাবশালী বালুদস্যুরা ভূগর্ভস্থ থেকে বালু উত্তোলন করছে। উপজেলার বিভিন্ন বড় ব্রীজ ও স্থাপনার আশেপাশে স্থাপন করা হয়েছে বালু তোলার মেশিন। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের ফলে ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে অনেক স্থাপনা। উপজেলার কাটাখালী এলাকায় করতোয়া নদীতে ভাসমান মেশিন বসিয়ে বেশ কয়েক বছর থেকে বালু উত্তোলনের ফলে কাটাখালী ব্রীজটি ধ্বসে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। পাশর্^বর্তী বড়দহ এলাকায় গোবিন্দগঞ্জ-গাইবান্ধা সড়কের বড়দহ সেতু এলাকায় প্রভাবশালী এক ব্যক্তির নামভাঙ্গিয়ে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে মোটা অংকের টাকা আয় করছে স্থানীয়ভাবে সমাজসেবক পরিচয়দানকারী এক বালু ব্যবসায়ি।
অপরদিকে মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের দেওয়ানতলা ব্রীজ এলাকায় স্থানীয় বোচাদহ গ্রামের কয়েকজন স্বার্থন্বেষী ব্যক্তি বাঙ্গালী নদীতে ভাসমান শ্যালো মেশিন স্থাপন করে বেশ কয়েক বছর যাবত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে। এই এলাকায় বাঙ্গালী নদীর উপর অবস্থিত একটি বৃহৎ রেলসেতু এবং দুইটি বৃহৎ সড়কসেতুর এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
এব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন জানান, গত ১০ দিনে বালুদস্যুদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে ৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং প্রায় ৩০টি মেশিন ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি মামলা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লে¬খ করেন।
জানা গেছে, বালুদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসনের অভিযানের পরেও তাঁরা নতুন করে পুনরায় বালু উত্তোলন শুরু করায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে ইতোমধ্যে উপজেলার সকল অবৈধ বালু কারবারীদের কাছে বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com