মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১৬ অপরাহ্ন

গাইবান্ধায় ৮ মাসে দেড় শতাধিক ধর্ষণের শিকার

গাইবান্ধায় ৮ মাসে দেড় শতাধিক ধর্ষণের শিকার

স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধা জেলায় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা। গত ৮ মাসে গাইবান্ধা জেলায় দেড় শতাধিক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও শিশু। বিভিন্ন নারী সংগঠন জানাচ্ছে, বিচারহীনতা এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েদের হাতে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের কারণে অপরাধ বাড়ছে। পুলিশের মতে, আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি অভিভাবকসহ সবাইকে সচেতন হতে হবে।
ধর্ষণের ঘটনায় গাইবান্ধায় প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১৫ জন নারী ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সদর হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, জেলার সাত উপজেলায় ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১২০ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৩-১০ বছর বয়সের ১৪ জন, ১১-১৮ বছর বয়সের ৮৭ জন এবং ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে ১৯ জন।
সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১১-১৮ বছরের শিশু ও স্কুল-কলেজগামী কিশোরীরা। এতে আতঙ্কিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, রাস্তাঘাটে নিশ্চিন্তে চলাফেরা করা যায় না। সবসময় আতঙ্কে থাকতে হয়। ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে বিচারহীনতা ও নারীদের প্রতি কিছু মানুষের নেতিবাচক মনোভাব।
অভিভাবকেরা বলেন, মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে পরিবারে মানসিক চাপ বেড়ে গেছে। ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনার মাধ্যমে কাউন্সেলিং প্রয়োজন, এই ধরনের কাজ করা যাবে না।
নারী, শিশু ও মহিলা বিষয়ক সংগঠনগুলো বলছে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, অশ্লীলতা এবং পর্নোগ্রাফির কারণে ধর্ষণের মতো অপরাধ বাড়ছে। অভিযুক্তরা গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে অনেকেই পার পেয়ে যাচ্ছে।
গাইবান্ধা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিক্তু প্রসাদ বলেন, সমাজে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি রয়েছে, সেটিই নারীর ওপর নির্যাতনের ঘটনা বাড়ার কারণ। গাইবান্ধা বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সংগঠক কলি রানী বর্মন বলেন, যুবক ও তরুণদের মধ্যে অনেকেই পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্ত। এ বিষয়ে পুলিশের নজরদারির প্রয়োজন আছে।
আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি অভিভাবকসহ সবাইকেই সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে পুলিশ। গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শরিফুল আলম বলেন, আমাদের অফিসারদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে সতর্ক করা হচ্ছে। মা-বাবাকে সচেতন হতে হবে যাতে বাচ্চারা বেশি রাত পর্যন্ত বাইরে না থাকে। স্কুল-কলেজে সচেতনতা বাড়ানোর কাজও আমরা চালাচ্ছি।
উল্লেখ্য, জেলায় গত ৮ মাসে ১৫৫টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ২০২৪ সালে এক বছরে ১৬২ জন নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং ২২২ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com