বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫০ অপরাহ্ন

গাইবান্ধায় সুদের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় এক ব্যক্তিকে হত্যা

গাইবান্ধায় সুদের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় এক ব্যক্তিকে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধায় জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর স¤পাদকের বাড়ি থেকে ফাঁসিতে ঝুলানো অবস্থায় শহরের থানাপাড়ার আফজাল সুজের সাবেক মালিক হাসান আলীর (৩৮) মৃতদেহ গতকাল শনিবার সকালে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যাকান্ডের অভিযোগে উক্ত আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানাকে বাড়ি থেকে আটক করেছে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশ।
পাওনা টাকার সুদের কিস্ত্রি না দেয়ায় টানা এক মাস ওই ব্যবসায়ীকে মাসুদ রানার বাড়িতে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয় বলে তার স্ত্রী বিথী বেগমের সদর থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে জানা গেছে। হাসান আলীর স্ত্রী গত ৭ মার্চ থানায় এক লিখিত অভিযোগে জানায়, মাসুদ রানা একজন দাদন ব্যবসায়ি। তার কাছ থেকে ঋণ নেয়া টাকার সুদের কিস্তি দিতে না পারায় গত ৬ মার্চ হাসান আলীকে সকাল ৯টায় তার থানাপাড়ার বাসা থেকে মাসুদ রানা ব্যবসা সংক্রান্ত কথা আছে বলে নিজ মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে চলে যায়। এরপর মাসুদ রানা তার নিজ বাসায় হাসানকে আটকে রাখে মানসিকভাবে নানা ধরণের নির্যাতন চালায় এবং ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে। হাসান আলী তার স্ত্রী বিথী বেগমকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করলে ওই বাড়ি থেকে সে তার স্বামীকে নানাভাবে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এসময় মাসুদ রানা আটক হাসান আলীকে ছেড়ে না দিয়ে উল্টো তার স্বামীর আরও বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি করবে বলে বিথী বেগমকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।
এমতাবস্থায় বিথী বেগম থানায় গেলে থানা কর্তৃপক্ষ দায়েরকৃত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ মার্চ পুলিশ হাসানকে মাসুদ রানার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় আনার পর আবারো মাসুদ রানার জিম্মায় দেয় বলে অভিযোগ করেন হাসান আলীর স্ত্রী বিথী বেগম। গাইবান্ধা সদর থানা কর্তৃপক্ষ লিখিত দিয়ে হাসানকে আবারো নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মাসুদ রানা। সেই থেকে মাসুদ রানার বাড়িতেই আটক থাকে হাসান আলী। পরে তার মৃতদেহ ফাঁসিতে ঝুলানো অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের সময় গলার দড়ি লাগানো হাসান আলীর লাশের পা টুলের উপর ভাঁজ করা ছিল। এব্যাপারে হাসান আলীর স্ত্রী বিথি বেগম ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হাসান আলীকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানাকে হ্যান্ডকাপ ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকার লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং তাকে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে ও কোমরে দড়ি লাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানায়। এসময় বিক্ষুব্ধ অনেকে পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে থানা থেকে আরও পুলিশ গিয়ে মাসুদ রানার হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে এবং হেলমেট পরিয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। এ হত্যার ঘটনাটি শহরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং তা টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com