শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩২ অপরাহ্ন

গাইবান্ধায় নারী শ্রমিকরা মজুরি বৈষম্যের শিকার

গাইবান্ধায় নারী শ্রমিকরা মজুরি বৈষম্যের শিকার

স্টাফ রিপোর্টারঃ পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকেরা দেশের উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রাখছেন। প্রতিদিন কাকডাকা ভোর হতে পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও ছুটে চলছেন বিভিন্নস্থানে কাজের সন্ধানে। ক্লান্তিহীনভাবে রোদবৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে মাঠেঘাটে কাজ করতে দেখা যায় এখন নারী শ্রমিকদের। সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে গাইবান্ধা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল নিভৃত পল্লীতে নারী শ্রমিকেরা কোন না কোন কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখছে। এসব নারী শ্রমিক একজন পুরুষ শ্রমিকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সমানতালে পরিশ্রম করলেও মজুরী প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তারা প্রতিনিয়ত দারুণ বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। প্রতিনিয়ত নারী শ্রমিকরা প্রতারিত হলেও কেউ এগিয়ে আসছে না ন্যায্য পাওনা আদায়ের ব্যাপারে সোচ্চার ভূমিকা রাখতে। ফলে বরাবরই এসব নারী শ্রমিকরা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এমনিতেই গাইবান্ধা জেলা দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় অনুন্নত। ইতোপূর্বে এ জেলা থেকে প্রচুর পুরুষ ও নারী শ্রমিক কাজের সন্ধানে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাড়ি জমাতো। বর্তমানে এ জেলা কৃষি নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারী শ্রমিকের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কারণ পুরুষ শ্রমিকের চেয়ে একদিকে যেমন নারী শ্রমিকদের মজুরী কম অপরদিকে তাদের কাজেও নেই কোন ফাঁকিবাজি। এসব মহিলা শ্রমিক মিল-চাতালে ধান সিদ্ধ ও শুকানোর কাজ, ইটভাঙ্গা, রাজমিস্ত্রির যোগালির কাজ, জমিতে রোপা লাগানোসহ আগাছা পরিস্কার এমনকি মাটি কাটার কাজ করে দিনমজুর স্বামীকে সহযোগিতা ছাড়াও কোন কোন ক্ষেত্রে পুরো পরিবারের ভরণ-পোষণ চালিয়ে আসছে। বর্তমানে জেলায় নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানে রাজমিস্ত্রির যোগালি এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কান্ট্রি প্রোগ্রামের কাজে মহিলা শ্রমিকদের ব্যাপক অংশগ্রহণ লক্ষ্যকরা যায়। কান্ট্র্রি প্রোগ্রামে মহিলা শ্রমিকরা পুকুর খনন, মাটি কেটে গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার প্রকল্পে গ্রুপ ভিত্তিক কাজ করে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। দেশের আত্মসামাজিক উন্নয়নে এসব নারী শ্রমিক উল্লেখযোগ্য অবদান রাখলেও তারা কাজ শেষে মজুরি পায় পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় অনেক কম। পুরুষ শ্রমিকের মতো সকাল থেকে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে কম মজুরি পাওয়া নারী শ্রমিকরা মনের কষ্ট মনে রেখে সংসারের অভাবের কথা স্মরণ করে কাজ করে যায়। সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের আসমা, আমেনা, খালেদারা বলেন, ‘কাজ করি কাজ শেষে মজুরি পাই পুরুষের তুলনায় অর্ধেক।’ তারপরও তাদের একটাই লক্ষ্য সমাজে আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকা। এদের অনেকের স্বামী থাকলেও এরা অস্বচ্ছল পরিবার। আবার কেউ অল্প বয়সেই বিধবা কিংবা স্বামী পরিত্যক্তা। অভাবের কারণে কম মজুরিতেও তারা বাধ্য হয়ে শ্রম বিক্রি করেন।
বর্তমান উন্নয়নশীল দেশে যেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রেই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে সেখানে ক্ষেতে খামারে নিয়োজিত নারী শ্রমিকদের মজুরি বৈষম্য অত্যন্ত দুঃখজনক। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এই বৈষম্য দূরিকরণে সরকার এগিয়ে আসবে এমন প্রত্যাশা সচেতন মহলের।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com