শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৫৯ অপরাহ্ন

গাইবান্ধায় কিডনি পাচার চক্রের সদস্য আটক

গাইবান্ধায় কিডনি পাচার চক্রের সদস্য আটক

স্টাফ রিপোর্টারঃ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ছোট সোহাগী গ্রামের আব্দুল মজিদ সরকারের পুত্র মোঃ আব্দুল ওয়াহাবকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বানিহালী গ্রামের নুর আলমের পুত্র রাকিবুল হাসান একটি ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তার কর্মস্থল গাজীপুর থেকে তাকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজি করার পরেও ওহাবের সন্ধান না পাওয়ায় তৎকালীন সময়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় ভিকটিমের পিতা আব্দুল মজিদ একটি মামলা দায়ের করেন গোবিন্দগঞ্জ থানার মামলা নং ০৩ তাং ০২-১০-২০৮ধারা ৩৬৫/৩৪পেনাল কোড।
খোঁজ সন্ধানের প্রাক্কালে গত ২৯-০৯-২০১৯ ইং তারিখ সকাল অনুমান ১০ ঘটিকার সময় বাদীর বড় পুত্র ওবায়দুল মামলায় বর্ণিত ১ নং আসামী রাকিবুল হাসানকে কালিয়াকৈরে দেখতে পেয়ে কালিয়াকৈর থানায় ফোন দিলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। কালিয়াকৈর থানা পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতরা রাখিবুল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে ভিকটিম ওহাবকে কিডনি পাচারকারী চক্রের কাছে বিক্রি করা হয়েছে।
এরই এক পর্যায়ে গত ২৮ -০৭-২০১৯ ইং তারিখে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাইবান্ধা অত্র মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে। মামলায় বর্ণিত আসামি ও ভিকটিমের সাথে কথা বলে গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ১৩-১১-২০২০ ইং তারিখে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানারা গপলাশতালী এলাকার আব্দুর রশিদের পুত্র রায়হান আলীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত এই রায়হান আন্তঃজেলা কিডনি পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
এই বিষয়ে গতকাল গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই তাদের পলাশপাড়া কার্যালয় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়।
এই মামলার ভিকটিম আব্দুল ওয়াহাব জানায় তার গ্রামের বাড়ীর রাকিবুল হাসান নামের এক পরিচিত ব্যাক্তি গাজীপুর থেকে তাকে একটি ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাকে বিভিন্ন হাত ঘুরে ভারতে পাচার করা হয়।সেখানে ওহাবকে জানানো হয় তোমাকে পাঁচ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে। তোমার একটি কিডনি আমরা নেব।
এ ব্যাপারে ওহাব তাদেরকে কিডনি না নেওয়ার অনুরোধ করলে তারা তা কর্ণপাত না করে বরং তাকে হুমকি-ধামকি প্রদান করে এবং বলে যদি তুমি স্বেচ্ছায় কিডনি না দাও তাহলে তোমাকে মেরে লাশ গুম করা হবে। তখন বাধ্য হয়েই তিনি কিডনি প্রদানে রাজি হয় একটি কিডনি অপারেশন করে বের করে নিয়ে দীর্ঘ এক মাস পর তাকে বিমান বন্দরে পৌঁছে দেওয়া হয়। ওহাবের ভাষ্যমতে কিডনি বিনিময় তিনি মাত্র ৪৬/৪৭ হাজার টাকা পেয়েছেন।
বর্তমানে ওয়াহাবের গোবিন্দগঞ্জের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তার পরিবার-পরিজন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত,আগের মত কাজকর্ম করতে পারেননা ৮থেকে ১০ কেজি ওজনের বেশি ওজন বহন করতে পারে না।
স্বাভাবিকভাবেই টানাপোড়নের এই সংসারে তার পরিবার মারাত্মক দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com