বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪২ অপরাহ্ন

গাইবান্ধার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশে সমস্যা সংকট

গাইবান্ধার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশে সমস্যা সংকট

স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে মাল্টিমিডিয়া শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হলেও নিম্নমানের ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম, নিয়মিত ক্লাশ না হওয়া নানা সমস্যা সংকটে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ফলে উন্নত ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় শতকরা ২১ ভাগ বিদ্যালয়ে সঠিকভাবে মান সম্পন্ন মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ হচ্ছে এবং যা থেকে ওই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শিক্ষায় ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা পাচ্ছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ এনায়েত হোসেন জানান, গাইবান্ধার ৭টি উপজেলায় ৪৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া সরঞ্জাম সরকারি উদ্যোগে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিজস্ব উদ্যোগে ৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া সরঞ্জাম ক্রয় করে ডিজিটাল এই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এরমধ্যে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে ৮৮টি এবং নিজ উদ্যোগে ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। গোবিন্দগঞ্জে ৯০টি এবং ১০টি, গাইবান্ধা সদরে ৬৪টি এবং ৮টি, সাদুল্যাপুরে ৭৫টি এবং ৭টি, সাঘাটায় ৪৭টি এবং ৭টি। এছাড়া সরকারি উদ্যোগে পলাশবাড়িতে ৪৯টি এবং ফুলছড়িতে ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণি কক্ষে বিশেষ পদ্ধতিতে শিক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থার প্রস্তুতকৃত ল্যাপটপ দোয়েল, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, স্ক্রিন, মরটেম প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ৫ জন শিক্ষককে মাল্টিমিডিয়া পদ্ধতিতে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরী করে বিশেষ শ্রেণি কক্ষে শিক্ষাদানের জন্য প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও বিশেষ প্রকল্পের আওতায় শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এই প্রকল্পের আওতায় ল্যাপটপ, প্রিন্টার, ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর স্ক্রিন, ইন্টারনেট সংযোগ, মরটেম এবং কক্ষটি সাজানোর জন্য আসবাবপত্র ও দরজা-জানালার পর্দা ক্রয় সহ আনুসাঙ্গিক ব্যয়ের জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টাকাও দেয়া হয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে আরো জানা গেছে, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব রয়েছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১১টি, গাইবান্ধায় ৬টি, পলাশবাড়িতে ৬টি, সুন্দরগঞ্জে ৭টি, ফুলছড়িতে ৬টি, সাঘাটায় ৬টি এবং সাদুল্যাপুরে ১টি।
সরেজমিনে জেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ রুম ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এর শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের সাথে কথা বলে এ সম্পর্কে নানা সমস্যা সংকট পরিলক্ষিত হয়। প্রথমতঃ ডিজিটাল এই শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগ একান্ত জরুরী হলেও জানা যায়, জেলার মাত্র ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। বাকিগুলোতে নেই। তদুপরি ল্যাপটপ, প্রজেক্টর উন্নতমানের না হওয়ায় ঘন ঘন নষ্ট হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ মাস পরও ল্যাপটপের উন্ডোজ নষ্ট হয়ে যায়, ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়াও অকেজো হয়। যা মেরামত করতে হয় প্রতিষ্ঠানের নিজ ব্যয়ে। মাল্টিমিডিয়া ও ল্যাপটপ সরকারিভাবে মেরামতের ব্যবস্থা রয়েছে শুধুমাত্র রংপুর বিভাগের জন্য রংপুর টিচার ট্রেনিং কলেজের কম্পিউটার সেলে। রংপুর গিয়ে মেরামত করে নিয়ে আসা সময় সাপেক্ষ, এতে ক্লাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাশ রুটিনে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ নির্ধারিত থাকলেও নিয়মিত ক্লাশ হয় না। তদুপরি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অনিহার কারণে বিষয় ভিত্তিক নতুন নতুন আকর্ষনীয় ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরী না করে দায়সারাভাবে যেনতেন একটি মাত্র কনটেন্ট দিয়েই ক্লাশ সারেন। যা শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ সৃষ্টি করতে পারছে না। এতে ব্যাহত হচ্ছে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতির শিক্ষা ব্যবস্থা। অনেক বিদ্যালয়ে এবং বিশেষ করে মাদ্রাসাগুলোতে মাল্টিমিডিয়ার ক্লাশ রুমগুলো যথেষ্ট অযতেœর ছাপ পরিলক্ষিত হয়।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com