বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৩ অপরাহ্ন

গাইবান্ধার টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিসটির এখন জরাজীর্ণ বেহাল দশা

গাইবান্ধার টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিসটির এখন জরাজীর্ণ বেহাল দশা

স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধার টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিস ভবনটির এখন জরাজীর্ণ বেহাল দশা। অথচ এক সময় সরকারি টেলিফোন ও টেলিগ্রাম বিভাগের আওতাধীন পিকে বিশ্বাস রোডে গাইবান্ধা প্রধান ডাকঘর সংলগ্ন এই অফিসটি ছিল দ্রুত যোগাযোগ মাধ্যমের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ অফিস। গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম সড়কের পাশে টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিসটি অযত্ন অবহেলায় এখন গণ সৌচাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গোটা ভবনটি নানা আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে প্রাচীন কোন পরিত্যক্ত ভবনের রূপ ধারণ করেছে। এমনকি অফিসের দরজা-জানালাসহ আসবাবপত্র খোয়া যাচ্ছে। মূল্যবান অফিস ভবনটিতে শ্যাওলা জন্মে এখন তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেদিকে কোন নজর নেই। ¬¬¬
মোবাইল টেলিফোন এবং ইন্টারনেট সার্ভিস চালু হওয়ার আগে একসময় মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম ছিল ডাকযোগে প্রেরিত চিঠি এবং দ্রুত খবরা-খবর আদান প্রদানের জন্য টরে টক্কা মোস কোডে পাঠানো টেলিগ্রাম। সেসময় শুধু জেলা ও মহুকুমা পর্যায়েই এই টেলিগ্রাম অফিস ছিল। ওই অফিসে টেলিগ্রামের নির্দিষ্ট ফরমে ইংরেজীতে বার্তাটি লিখে দিয়ে বার্তার সংখ্যা অনুযায়ি ফি জমা দিতে হতো। ওই বার্তাটি টরে টক্কা মোস কোডে প্রাপকের মহুকুমা টেলিগ্রাম অফিসে প্রেরণ করা হতো। মহুকুমা অফিস থেকে শুধুমাত্র শহর এলাকায় তাদের নিজস্ব পিয়ন দিয়ে কাগজে ছাপানো ওই বার্তাটি বিলি করা হতো। আর মহুকুমার বাইরে ডাকযোগে প্রাপকের ঠিকানায় প্রেরণ করা হতো।
পরবর্তীতে টিএন্ডটির আওতায় টেলিফোন সার্ভিস চালু হওয়ার পর টেলিগ্রামের পাশাপাশি সরকারি পিসিও (পাবলিক কল অফিস) হিসেবেও ব্যবহৃত হতে থাকে। তখন ওখান থেকে এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে টেলিফোনে কথা বলার সময় অনুযায়ি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিয়ে বাইরে এন্ডডাব্লিউডি কল এবং স্থানীয় পর্যায়ে লোকাল কল করা যেতো। ফলে যোগাযোগ মাধ্যমের একমাত্র অফিস হিসেবে এই টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিসটি মানুষের কাছে ছিল অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ঘরে ঘরে সরকারি টেলিফোন সার্ভিস চালু হওয়ার পর থেকেই এই অফিসটির গুরুত্ব কমতে থাকে। পরবর্তী পর্যায়ে মোবাইল ও টেলিফোন চালু হলে এই টরে টক্কা টেলিগ্রাম সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি সরকারি টেলিফোন সার্ভিসও মানুষের কাছে এখন প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। তদুপরি ডাকযোগে চিঠিপত্র লেখা তো বন্ধ হয়েই গেছে।
সেই থেকে এই টেলিগ্রাম ও পিসি অফিসটি বন্ধ এবং পরিত্যক্ত হয়ে যায়। কিন্তু সরকারি স্থাপনা হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এটি সংরক্ষণ করা অপরিহার্য হলেও সেক্ষেত্রে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে চরম অযত্ন অবহেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভবনটি এবং সংশ্লিষ্ট সম্পদ। এর পাশাপাশি এই টেলিগ্রাম অফিস সংলগ্ন জায়গাও বেদখল হয়ে গেছে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com